কলকাতা: চোখ থেকে জল পড়ছে। তবে সে তো চোখের ভিতরকার জল। এবার সেই জল বাইরে থেকেও আমদানি করা সম্ভব। সম্প্রতি এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা তৈরি করলেন কৃত্রিম কনজাংটিভা (human conjunctiva)। এই হিউম্যান কনজাংটিভা চোখের জল তৈরি করতে পারে। ফলে চোখের জল কোনও কারণে কম পড়লে জোগান দিতে পারবে এই কৃত্রিম কলাকোশ। 


কী কাজ এই কৃত্রিম কনজাংটিভার (conjunctiva research)?


নেদারল্যান্ডের অরগ্যানয়েড গ্রুপের বিজ্ঞানীরা কৃত্রিমভাবে বানিয়েছেন হিউম্যান কনজাংটিভা। এর জন্য অবশ্য প্রাথমিকভাবে কিছু কলাকোশ তৈরি করতে হয়েছে। যাকে বলা হয়, টাফট সেল। এই বিশেষ কলাকোশটি অ্যালার্জির সময় সংখ্যায় অনেক বেশি থাকে। এর ফলে চোখে কোনও অ্যালার্জি হলে এটি সক্রিয় থাকে। এই বিশেষ কলাকোশটিকে চোখের বিভিন্ন ওষুধ পরীক্ষা নিরীক্ষার কাজে লাগানো হচ্ছে। এই ওষুধগুলি কনজাংটিভাতে সংক্রমণ ঘটায় এমন রোগগুলি সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। কিন্তু এই কনজাংটিভা দিয়েই কেন সেই কাজ করা হচ্ছে? কারণ চোখের উপরিভাগের কিছু অন্যরকম বৈশিষ্ট্য রয়েছে।


কী হবে এই কনজাংটিভা দিয়ে?


চিকিৎসকদের কথায়, চোখের উপর এই পাতলা স্তরটি চোখকে আগলে রাখে। বাইরের ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ধুলোবালি থেকে কনজাংটিভা চোখকে বাঁচায়। পাশাপাশি এটি চোখের জলও তৈরি করে কিছুটা। কিন্তু চোখে একবার কোনও সংক্রমণ হলে সরাসরি কনজাংটিভা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যেমন শুষ্ক চোখ, ক্যানসার, অ্যালার্জিতে এমনটা হয়। কিছুক্ষেত্রে কনজাংটিভা নষ্টও হয়ে যেতে পারে। তাতে অন্ধত্ব আসে। এখনও পর্যন্ত কোনও কৃত্রিম কনজাংটিভা মডেল (human conjunctiva model) ছিল না। ফলে কনজাংটিভা ক্ষতিগ্রস্ত হলে চোখে কী কী বদল ঘটে, তার সবটা জানা ছিল না বিজ্ঞানীমহলের। এবার সেই অধরা অজানা দিকটিই জানা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন গবেষকদের একাংশ।


কেন এটি জরুরি?


কনজাংটিভা নানা কারণে আক্রান্ত হতে পারে। কিন্তু সেই সংক্রমণ বা রোগগুলি থেকে চোখকে সারিয়ে তোলা সবসময় সহজ নয়। কারণ বেশ কিছু রোগের চিকিৎসা এখনও বেশ সীমিত। নতুন কৃত্রিম কনজাংটিভা তৈরি হওয়ায় সেই বাধা পেরোনো যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। কৃত্রিম কনজাংটিভার সাহায্যে রোগটিকে বুঝে তার চিকিৎসার খোঁজ চলবে। 


প্রসঙ্গত, এই বিশেষ কনজাংটিভাটি তৈরি করা হয়েছে প্রাকৃতিক উপায়েই। ল্যাবে এটি একটি ডিশের মধ্যে তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। অরগ্যানয়েড গ্রুপের কনজাংটিভা কলাকোশ বিশ্বে প্রথম এই ধরনের হিউম্যান টিস্যু মডেল।


আরও পড়ুন: Cervical Cancer: কীভাবে ধরা পড়ে সার্ভিক্যাল ক্যানসার, নিরাময় সম্ভব ?