কলকাতা: ঘামের সমস্যা আমাদের নিত্য একটা সমস্যা। বাড়ি হোক কিংবা অফিস-কাছারি, কিংবা বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে পার্টি বা আড্ডা, ঘামের সমস্যা আমাদের সব ক্ষেত্রেই একটা অযাচিত বিড়ম্বনার মধ্যে ফেলে দেয়।
বর্ষাকালের আবহাওয়ায় আদ্রতার পরিমাণ বেশি থাকে। ফলে যতই আপনি রোম্যান্টিক মুডে থাকুন না কেন, ঘামের সমস্যা আপনাকে চিন্তার মধ্যে ফেলেই। অতিরিক্ত ঘাম হতে থাকলে, তার থেকে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা, চুলকানি, ঘামের দুর্গন্ধ প্রভৃতি দেখা দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন যে, সাধারণত আন্ডারআর্ম এবং শরীরের ঢাকা অংশগুলোতে অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা দেখা দেয়। এর ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ তৈলাক্ত হয়ে পড়ে যেমন মাথার ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যায়। এই সময়ে শরীরের কোনও কোনও অঙ্গ শুকনো আর কোনও কোনও অঙ্গে ভিজে ভিজে ভাব দেখা দেয়।
এছাড়াও অত্যধিক ঘামের সমস্যার ফলে অ্যাকনে এবং বিভিন্ন ফাঙ্গাল ইনফেকশনের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাঁরা আরও জানাচ্ছেন যে, যদি আমরা কিছু কিছু নিয়ম মেনে চলতে পারি, তাহলে বর্ষাকালের মতো সুন্দর আবহাওয়ায় আপনি আরও বেশি সুস্থ এবং ফুরফুরে মেজাজে মানুষের সঙ্গে মিশতে পারবেন।
১. বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বর্ষাকালে অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা থেকে বাঁচতে সুগন্ধী সাবান ব্যবহার করতে পারেন। তবে, সেই সাবান যেন অবশ্যই অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল হয়। কারণ, আপনার সাবানে যদি অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে, তাহলে তা আপনার ত্বককে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে রক্ষা করবে এবং বিভিন্ন জীবাণু ধ্বংস করতে সাহায্য করবে।
২. এই সময়ে আপনি যদি আঁটোসাঁটো এবং সিন্থেটিকের পোশাক পরেন, তাহলে আপনার ত্বক শ্বাস নিতে পারবে না। এর ফলে ত্বকে ঘাম জমে থাকে। এবং তা থেকেই বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এই সময়ে বিশেষ করে যখন আপনি দিনের বেলা বাইরে বেরোচ্ছেন, তখন এমন পোশাক পরুন, যা আপনার ত্বকে হাওয়া চলাচল করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখতে ভুলবেন না। আপনার ব্যবহার করা পোশাক কিংবা তোয়ালে অন্য কারও সঙ্গে শেয়ার করা চলবে না।
৩. স্নানের সময়ে জলে ২ থেকে ৩ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার তেল মিশিয়ে নিন। যা শুধু যে আপনার ত্বকে সুগন্ধী এনে দেবে তাই নয়, এই সমস্ত এসেন্সিয়াল তেলগুলি ঘাম প্রতিরোধ করতেও সাহায্য করে এবং ঘামের দুর্গন্ধও প্রতিরোধ করে।
৪. আপনার যদি অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা থেকে থাকে, তাহলে অ্যান্টি ফাঙ্গাল উপাদান সমৃদ্ধ পাউডারও ব্যবহার করতে পারেন।
৫. ঘামের সমস্যার সঙ্গে খাবারেরও একটা গভীর যোগসূত্র রয়েছে। এই সময়ে অতিরিক্ত তেল মশলাযুক্ত খাবার একেবারেই খাওয়া যাবে না। স্বাস্থ্যকর হালকা খাবার এবং শাক-সব্জি খেলে ঘামের সমস্যা দূর হবে। এরই সঙ্গে মনে রাখতে হবে, অতিরিক্ত পরিমাণে কফি খাওয়াও কিন্তু ঘামের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে।
৬. সবশেষে যে বিষয়টা অবশ্যই মাথায় রাখা দরকার, তা হল, ঘামের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে প্রচুর পরিমাণে জল খেতে হবে। এতে যে শুধু ঘামের সমস্যাই দূর হবে, তাই নয়, আপনার শরীরও সুস্থ থাকবে।