Hair Botox: একদম শেষ মুহূর্তের কাউন্টডাউন চলছে। দোরগোড়ায় বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। বছরভর আর কিছু করা না হলেও, পুজোর পাঁচদিন নিজেকে 'ডিভা' সাজিয়ে তুলতে কিন্তু প্রায় সকলেই কমবেশি চেষ্টা করেন। বিউটি স্যালোঁর বাইরে থাকে লম্বা লাইন। কাজের চাপে যাঁরা এখনও নিজেদের এবং চুলের পরিচর্যা (Hair Care Tips) করে উঠতে পারেননি, তাঁদের জন্য রইল বিশেষজ্ঞের কিছু লাস্ট মিনিট সাজেশন। প্রতিবছরই বিউটি ট্রিটমেন্টে 'ইন' থাকে কিছু স্পেশ্যাল ট্রিটমেন্ট। এবার সেই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে 'হেয়ার বোটক্স' (Hair Botox)। 


এই হেয়ার বোটক্স আসলে কী? কারা করতে পারেন, খরচ কেমন, উপকার কী পাবেন, কীভাবে হয় সেইসব নিয়ে খুঁটিনাটি তথ্য দিলেন কলকাতা শহরের কসমেটোলজিস্ট সায়ন্তন দাস।


হেয়ার বোটক্স ট্রিটমেন্ট 


আমাদের একটা সাধারণ ধারণা রয়েছে মূলত ত্বকে অ্যান্টি-এজিং রুখতে অর্থাৎ বলিরেখার দাপট থেকে দূরে থাকার জন্য অনেকেই স্কিন বোটক্স করে থাকেন। এই 'বিউটি টার্ম'- এর সঙ্গে আমরা পরিচিত। কিন্তু হেয়ার বোটক্স? সায়ন্তন জানালেন, এটাও চুলের ক্ষেত্রে 'অ্যান্টি-এজিং' রুখে দেওয়ার জন্যই করা হয়। মূলত চুলের রুক্ষ-শুষ্ক ভাব দূর করে, চুলের জেল্লা অর্থাৎ শাইন ফেরাতে কাজে লাগে। অনেকের চুলেই স্প্লিট এন্ডস বা ডগা ফেটে যাওয়ার সমস্যা দেখা যায়। চুল দেখতে একদম জৌলুসহীন ম্যারম্যারে লাগে, যেন কোনও প্রাণ নেই। যাঁদের এইসব সমস্যা রয়েছে তাঁরা হেয়ার বোটক্স ট্রিটমেন্ট করাতে পারেন। স্ট্রেটনিং, স্মুদনিং, পামিং, কালারিং- এইসব কেমিক্যাল ট্রিটমেন্টের ফলেও চুলের একদম বারোটা বেজে যায়। কার্যত প্রাণহীন হয়ে যায় চুলের গঠন। 


চুল ময়শ্চারাইজার বা আর্দ্র ভাব হারিয়ে ফেলে ত্বকের মতোই ডিহাইড্রেটেড হয়ে যায়। তখন প্রয়োজন হেয়ার বোটক্সের। সায়ন্তনের কথায় চুলের একদম গভীর স্তরে গিয়ে কন্ডিশনিং করা সম্ভব হয় এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। হেয়ার কিউটিকলের মধ্যে গিয়ে কন্ডিশনিং করে হেয়ার ময়শ্চারাইজার ফিরিয়ে দেওয়া হয় এবং ধরে রাখতে সাহায্য করে হেয়ার বোটক্স। চুলে ময়শ্চার রিটেন এবং লক করতে সাহায্য করে হেয়ার বোটক্স পদ্ধতি। আমাদের চুলে থাকে কেরাটিন, যা প্রতিনিয়ত একটু করে ক্ষয় হয়। হেয়ার বোটক্স কেরাটিন ট্রিটমেন্টের আপডেটেড এবং আপগ্রেড ভার্সান। এছাড়াও হেয়ার বোটক্স ট্রিটমেন্টের সক্রিয় উপকরণ ক্যাভিয়ার অয়েল, ভিটামিন বি৩, ভিটামিন ই এবং কোলাজেন। এই সমস্ত উপকরণ চুলে আর্দ্রভাব বজায় রাখতে সহায়তা করে। 


প্রায় আড়াই থেকে তিনঘণ্টা সময় লাগে হেয়ার বোটক্স ট্রিটমেন্টের ক্ষেত্রে। বেশ দীর্ঘ সময়ের প্রক্রিয়া। চুলে প্রোডাক্ট (এক্ষেত্রে একজাতীয়) লাগিয়ে তা মুড়ে বা র‍্যাপ করে রাখা হয় যাতে চুলের কিউটিকলের একদম ভিতরে পৌঁছে যেতে পারে। এই প্রোডাক্ট লাগানোর আগে চুলে ভাল করে শ্যাম্পু করতে হবে। চুলের ইলাস্টিসিটি ধরে রাখার জন্য একদম অভ্যন্তরে পুষ্টি পৌঁছনো প্রয়োজন। অতএব হেয়ার বোটক্স বেশ সময়সাপেক্ষ ট্রিটমেন্ট। কারও কোনও অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন থাকলে যিনি আপনার হেয়ার বোটক্স করছেন তাঁর পরামর্শ নিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। চার থেকে পাঁচ মাস এই ট্রিটমেন্টের উপকার পাবেন আপনি। পোস্ট হেয়ার বোটক্স ব্যবহার করতে হবে সালফার-ফ্রি শ্যাম্পু। এছাড়াও মিনারেল অয়েল, প্যারাবিন ইত্যাদি উপকরণ ছাড়া কন্ডিশনার ব্যবহার করা প্রয়োজন। সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা এই রেঞ্জে হেয়ার বোটক্স ট্রিটমেন্ট শুরু হয়। এরপর চুলের ভলিউম বা লেংথের উপর নির্ভর করে। হেয়ার বোটক্সের মাধ্যমে চুলে একটা স্ট্রেট স্মুদ লুক এলেও এটি কিন্তু স্ট্রেটনিং নয়।  


আরও পড়ুন- রোগ-সংক্রমণ এড়াতে সুদৃঢ় করুন ইমিউনিটি সিস্টেম, কী কী রাখবেন মেনুতে?