কলকাতা: রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন? আবার শীত পড়তেই চাগাড় দিয়েছে গাঁটের ব্যথা? এই সবই কমিয়ে দিতে পারে মিনিট তিরিশেকের একটি ছোট্ট কাজ। আর সেই কাজ হল হাঁটাহাঁটি। কোনওরকম উটকো দাবি নয়। বিজ্ঞানীদের গবেষণায় পাওয়া হাতে গরম প্রমাণ এমনটাই বলছে এবার। সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, উচ্চ রক্তচাপ ও রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস যাদের রয়েছে, ৩০ মিনিট হাঁটলেই তারা উপকার পাচ্ছেন। উল্লেখজনকভাবে কমছে তাদের রক্তচাপ। খুব ব্যস্ততা নিয়ে হোক বা ব্যস্ততা ছাড়াই, এই হাঁটাই উপকার দিচ্ছে মহিলাদের।


রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস কী? 


গবেষণার ফলাফল সম্পর্কে বিস্তারিত জানার আগে এই রোগটির ব্যাপারে বিশদে জেনে নেওয়া দরকার। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস আদতে একটি অটোইমিউন রোগ। অটোইমিউন রোগের অর্থ যে রোগে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শরীরের বিপদের কারণ হয়ে ওঠে। অনেকটা ঘরশত্রু বিভীষণ বলতে যা বোঝায়। এই রোগে আক্রান্ত অংশ ফুলে ওঠে, চলাফেরা করতে কষ্ট হয়। কিছু ক্ষেত্রে শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়েন অনেকে। ঘটনাচক্রে একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মহিলাদের মধ্যে আর্থ্রাইটিস বেশি সংখ্যায় দেখা যায়। এই পরীক্ষানিরীক্ষাটিও তাদের নিয়েই করা হয়েছে।


গোদের উপর বিষফোঁড়া


একেই ভোগাচ্ছে আর্থ্রাইটিসের ব্যথা। তার সঙ্গে গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাতেও অনেকে ভোগেন। বিজ্ঞানীদের মতে, যারা এই পরিস্থিতিতে রয়েছেন, তাদের কার্ডিয়োভাসকুলার অর্থাৎ হার্টের রোগে মৃত্যুর আশঙ্কা বেশি। সাধারণ রোগীদের জোড়া রোগে আক্রান্তদের মৃত্যুর আশঙ্কা ৫০ শতাংশ বেশি।


এই পরীক্ষানিরীক্ষার অন্যতম কান্ডারি সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক তিয়াগো পেকানহা সংবাদমাধ্যমকে জানান, তিরিশ মিনিটের হাঁটাহাঁটি রক্তচাপ বাড়ায়নি বরং কমিয়ে দিয়েছে। ২৪ ঘন্টা ধরে পর্যবেক্ষণ করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন বিজ্ঞানীরা। এই পরীক্ষার সাফল্য হাঁটারই ‘জয়গান’ গেয়েছে বলে দাবি তিয়াগোর।


কী দেখা গিয়েছে পরীক্ষায়?


পরীক্ষার ফলাফল সংবাদমাধ্যমকে বিস্তারিত জানান তিয়াগো। রক্তচাপ বা প্রেশার মাপার সময় দুটো মাপ দেখা হয়। এর মধ্যে একটি হল ডায়াস্টোলিক প্রেশার যেটি আদতে উপরের মাপ। অন্যটি হল সিস্টোলিক প্রেশার। যেটি নিচের ঘরের মাপ। তাঁর কথায়, ২৪ ঘন্টা ধরে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে অংশগ্রহণকারীদের। তাদের সিস্টোলিক প্রেশার  ৫ এমএমএইচডজি কমে গিয়েছে। এই ৫ ধাপ কমে যাওয়াটাই অনেকটা উপকার বলে জানাচ্ছেন গবেষক। কারণ এতে স্ট্রোকে মৃত্যুর আশঙ্কা ১৪ শতাংশ কমে যায়। পাশাপাশি হার্টের রোগে মৃত্যুর আশঙ্কাও ৯ শতাংশ কম হয়।


আরও পড়ুন: Disease X: ‘ডিজিজ এক্স’ নিয়ে আতঙ্কে বিজ্ঞানীরা ! এ রোগ কি করোনার থেকেও ভয়ঙ্কর ?