নয়াদিল্লি : জ্বর উঠে যাচ্ছে দ্রুত, গা আগুন গরম। ঠান্ডায় কাঁপুনি শরীরে। সারছেই না কাশি, গলা ব্যথা। পেশীতে অসহ্য ব্যথা। ছাড়ছেই না মাথা ব্যথা। শরীর জুড়ে ক্লান্তি। কারও কারও আবার চোখ হয়ে যাচ্ছে জবাফুলের মতো লাল। এমন সব উপসর্গ নিয়ে ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ছে। পরিসংখ্যান বলছে, ভারতের আটটি রাজ্যে থাবা বিস্তার করেছে সোয়াইন ফ্লু । H1N1 ভাইরাসে কাবু অনেকে। দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এই অসুখ।
সোয়াইন ফ্লু-তে মৃত্যুও
দিল্লি, কর্ণাটক, কেরল এবং তামিলনাড়ুতে পরিস্থিতি গুরুতর। গত জানুয়ারিতে ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬ জনের মৃত্যুর খবরও পাওয়া গিয়েছে। সোয়াইন ফ্লু-তে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে, পুদুচেরি, মহারাষ্ট্র, জম্মু ও কাশ্মীর এবং গুজরাতেও। চিকিৎসকরা বলছেন, এই রোগ সময় থাকতে চিকিৎসা করলে এক্কেবারে সেরে যায়। কিন্তু অবহেলা করলে হয়ে পারে মর্মান্তিক পরিণতি।
কেন্দ্রীয় সরকারের পরামর্শ
এক ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের প্রভাবে এই ফ্লু হয়ে থাকে। H1N1 একটি মারাত্মক ভাইরাস যা শূকর থেকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। ২০০৯ সালে ভারতে প্রথম সোয়াইন ফ্লু ধরা পড়ে। এরপর থেকে বারবার সোয়াইন ফ্লু থাবা বিস্তার করেছে। এই বছরের জানুয়ারিতে ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েছিল, যার মধ্যে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, কেন্দ্রীয় সরকারও এই বিষয়ে একটি পরামর্শ জারি করেছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের জারি করা নির্দেশে বলা হয়েছে,দিল্লি, কর্ণাটক, কেরল এবং তামিলনাড়ুতে পরিস্থিতি গুরুতর। এই রাজ্যগুলিতে এই বছর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক H1N1 সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছে । জানুয়ারিতে ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েছিল। একই সময়ে, চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে প্রথমটিই হল জ্বর। শরীরজুড়ে ক্লান্তি। খিদে চলে যাওয়া। গলা ব্যথা, বমি , কারও কারও ক্ষেত্রে ডায়ারিয়া। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ প্রথমে বুঝতেই পারেন না, তাঁদের সোয়াইন ফ্লু হয়ে থাকতে পারে। সাধারণ সর্দি-কাশি বলেই ভ্রম হয়। তার জন্যই চিকিৎসায় বিলম্ব হয়ে যায়। এর ফলে অবস্থা আরও খারাপ হয়।
কী বলছেন চিকিৎসকরা
সোয়াইন ফ্লু প্রতিরোধ করতে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। কোভিডকালের মতো ফিরিয়ে আনতে হবে বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যেস। সঙ্গে রাখতে হবে স্যানিটাইজার। জনবহুল জায়গায় মাস্ক পরা বাড়তি সুরক্ষা দেবে। যদি কারো কাশি বা সর্দি থাকে, তাহলে তাদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। এছাড়া ভিটামিন সি এবং ডি-র প্রয়োজন মেটাতে তাজা ফল, সবুজ শাকসবজি, হলুদ, দুধ এবং তুলসি আদা চা খেতে পারেন।