নয়াদিল্লি:   আমিষ খাওয়া ভাল , নাকি নিরামিষ। দু পক্ষেই মত, পাল্টা মত আছে। এই নিয়ে একটি সমীক্ষার ফল সামনে এসেছে।  আর তাতে মুখে হাসি ফুটতে পারে নিরামিষভোজীদের। আট সপ্তাহ যদি আমিষ খাবার বাদ দেওয়া যায় , তাহলে নাকি মিরাকল ঘটতে পারে আপনার সঙ্গে। সমীক্ষা বলছে,  নিরামিষ খাবার খেলে, একজনের জৈবিক বয়সটা কমে যাবে অনেকটাই। 


একজন মানুষের জৈবিক বয়সের সঙ্গে বিভিন্ন রোগ বালাইয়ের আশঙ্কার সম্পর্ক সরাসরি। জৈবিক বয়স  বাড়লে ডায়াবেটিস বা ডিমেনশিয়ার মতো রোগের ঝুঁকি বাড়ে। আর জৈবিক বয়স কম মানে, রোগ বালাইয়ের ঝুঁকি কিছুটা হলেও কম। বিএমসি মেডিসিন জার্নালে ( journal BMC Medicine)প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে,  DNA methylation এর উপর নির্ভর করে এই জৈবিক বয়স হ্রাসের ব্যাপারটি। এটা হল কারও ডিএনএ-র এক প্রকার রাসায়নিক পরিবর্তন । যাকে বলা হয় এপিজেনেটিক মডিফিকেশন। এই পদ্ধতিতে ডিএনএ নিজে বদলায় না,  জিনের অভিব্যক্তি পরিবর্তন হয়। 


আইএএনএস সূত্রে খবর, নতুন গবেষণাটি  ২১ জোড়া প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের উপর করা হয়েছিল । এঁরা প্রত্যেকেই যমজ। শুধু তাই নয় যাঁরা  identical twin অর্থাৎ যাঁদের একইরকম দেখতে।  এঁদের একটি নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে রেখে দেখা হয়, vegan diet এর ফলে এঁদের মধ্যে কেমন পরিবর্তন আসে। 


যমজদের একজনকে দেওয়া হয় আমিষ ডায়েট, আরেক জনকে নিরামিষ। ৮ সপ্তাহ চলে এক্সপেরিমেন্ট। যার আমিষভোজীদের রোজ ১৭০ থেকে ২২৫ গ্রাম মাংস  দেওয়া হত। ডায়েটে থাকত একটি ডিম এবং দেড় সার্ভিংস দুগ্ধজাত খাবার। আর যমজদের আরেকজনের জন্য বরাদ্দ ছিল শুধুই নিরামিষ খাবার(  vegan diet)। 


নিরামিষাশী খাবার যাঁরা ৮ সপ্তাহ ধরে খেলেন, দেখা গেল, তাঁদের হার্ট, হরমোন, লিভারের জৈবিক বয়স বেশ কিছুটা কমে গিয়েছে। তাছাড়া তাঁদের বিপাক ব্যবস্থাও যেন অনেক বেশি তরুণদের মতো।  বরং যাঁরা সবরকম খাদ্য খেয়েছেন, তাঁদের তুলনায়  নিরামিষভোজীরা ওজনও ঝরিয়েছেন এই সময়টায় বেশ কিছুটা। গড়ে ২ কিলোগ্রাম মতো ওজন বেশি ঝরেছে নিরামিষ খেয়ে। 


নিরামিষ ভোজীদের সামগ্রিক ভাবে জৈবিক বয়সই হ্রাস ( estimates of biological age )পেয়েছে।  একেই বলে epigenetic ageing clock।  


তবে এর থেকে এখনই কোনও সিদ্ধান্তে আসতে চান না গবেষকরা। তাঁরা আবার সার্ভে করতে চান। খাওয়াদাওয়া, বয়স , ওজন সবকিছুর মধ্যে সঠিক সম্পর্ক বের করতে গেলে দরকার আরও গভীর গবেষণা।