ঝিলম করঞ্জাই, অনির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা : আতঙ্কের নাম অ্যাডিনো ভাইরাস ( Adenovirus )! ভয়াবহ আকার নিচ্ছে ভাইরাসের সংক্রমণ। হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। উদ্বেগ বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে, নাইসেড-এর রিপোর্ট। যেখানে বলা হয়েছে, গত দেড়মাসে স্বাস্থ্য দফতরের পাঠানো ৫০০-রও বেশি নমুনার মধ্যে ৩২ শতাংশই অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত।
এই পরিস্থিতিতে আতঙ্ক বাড়িয়ে বৃহস্পতিবার এক অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুকন্যার মৃত্যু হয়েছে পার্ক সার্কাসের ICH-এ। হাসপাতাল সূত্রে খবর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে কয়েকদিন ধরে ওই শিশু ভর্তি ছিল আইসিইউ-তে। এর আগে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় ৩ অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুর।
অন্যদিকে, এদিন বিসি রায় শিশু হাসপাতালে নিউমোনিয়ায় মৃত্যু হয়েছে এক শিশুর। মৃত শিশু অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত কিনা, তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত নন চিকিৎসকরা।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অপূর্ব ঘোষ জানালেন, ' এর আগেও হয়েছে এই ভাইরাসের সংক্রমণ। এবার প্রচুর হচ্ছে। আইসিইউতে রাখার মতো পরিস্থিতি হচ্ছে যেটা উদ্বেগের। কমতে কমতে ১৫ দিন লাগবে। জ্বর থাকলে স্কুলে পাঠাবেন না। ' অ্যাাডিনো সংক্রমণ মোকাবিলায় নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
গাইডলাইনে বলা হয়েছে :
- শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাসে অস্বস্তি থাকলে নিতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ।
- খাওয়াদাওয়া বা প্রস্রাবের পরিমাণ কমে গেলেও যেতে হবে চিকিৎসকের কাছে।
- জ্বর-সর্দি থাকলে, শিশুদের স্কুলে না পাঠানোরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে নির্দেশিকায়।
- ৩ থেকে ৫ দিন টানা জ্বর থাকলে বা রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ৯২ শতাংশের কম থাকলে শিশুদের ভর্তি করতে হবে হাসপাতালে।
আরও পড়ুন :
'অ্যাম্বুলেন্সে গিয়েও পেসেন্ট দেখতে হচ্ছে', অ্যাডিনোভাইরাসের আক্রমণ থেকে রেহাই পাচ্ছেন না প্রাপ্তবয়স্করাও
চিকিৎসকরা বলছেন, এই ভাইরাসে মূলত আক্রান্ত হচ্ছে ১ থেকে ৪ বছর বয়সী শিশুরা। শিশুদের ক্ষেত্রে এই উপসর্গ মূলত - - জ্বর
- গলা ব্যথা
- ফুসফুসে সংক্রমণ
- চোখ লাল হয়ে যাওয়া
- ডায়েরিয়া
- বমি
- পেট ব্যথা
- মূল সমস্যা শ্বাসকষ্ট।
রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে যে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে- হাসপাতালে রোজ কত শিশু আসছে, তাদের কতজনকে ভর্তি করতে হচ্ছে, সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট দিতে হবে। হাসপাতালে শিশুদের ভর্তি করার পর কী ওষুধ দিতে হবে, কোন পরিস্থিতিতে কী পরিমাণ ওষুধ দিতে হবে তাও উল্লেখ করা হয়েছে নির্দেশিকায়। জেলার শিশু হাসপাতালগুলিকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। অক্সিজেন ও ভেন্টিলেটর পরিকাঠামো যেন ঠিক ঠাক থাকে, তাও দেখতে বলা হয়েছে।