কলকাতা : বাড়ছে লিভারের ( Liver ) অসুখ। কম বয়সেই লিভারের স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। প্রথমে হজমের সমস্যা থেকে শুরু করে পরে বড় অসুখের দিকে মোড় নিতে সময় লাগছে না। তার কারণ যেমন একদিকে প্রাথমিক পর্যায়ে সমস্যার গুরুত্ব না বোঝা, তেমনই জীবনযাত্রা সংক্রান্ত কতকগুলি সমস্যাও লিভারের স্বাভাবিক কারকর্ম ব্যাহত করছে।
চিকিৎসকরা মনে করছেন, অ্যালকোহল, জাঙ্ক ফুড, বেশি চর্বিযুক্ত খাবার এবং অতিরিক্ত চিনি যুক্ত পানীয় খাওয়া, ইত্যাদি অভ্যেস ভারতে লিভারের রোগের (Liver diseases )বাড়বাড়ন্তের কারণ। ১৯ এপ্রিল বিশ্ব লিভার দিবসে (World Liver Day) চিকিৎসকরা বলছেন, লিভারের অসুখ যেভাবে বাড়ছে , তা চিন্তার তো বটেই। বিশেষ এই দিনটিতে মানুষকে সচেতন করে তুলতে বেশ কিছু টিপস শেয়ার করেছেন তাঁরা।
সংবাদ সংস্থা IANS কে গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট ডা. আভাই সিং জানান, লিভারের রোগ ভারতে মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়েছে, প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন লিভারের অসুখে ভুগছে।
তিনি বলেন, ভারতে, লিভারের অসুখে মৃত্যুর হার প্রতি বছর আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গিয়েছে। সারা বিশ্বে ২ মিলিয়ন মানুষের লিভার-সম্পর্কিত রোগে মৃত্যু ঘটে। সেই সঙ্গে ভয়াবহ ভাবে লিভার ক্যান্সারের হার বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে ভারতে যকৃতের অসুখে ভোগা রোগীদের মধ্যে একটা বড় অংশের বয়স ৩০-৪০ ।
- হেপাটাইটিস ভাইরাস (এ থেকে ই)
- অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার
- নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ
- লিভার টিউমার
ইত্যাদি অসুখে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
চিকিৎসক মনে করছেন, "এই সব অসুখের প্রধান কারণই হল বেশি জাঙ্ক ফুড, উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার এবং চিনি যুক্ত পানীয় খাওয়া "
এছাড়াও ক্রমবর্ধমান হারে অ্যালকোহল সেবনের ফলে ভারতে অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (AFLD) এ আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে, বলছেন ড. (ব্রিগেডিয়ার) অতুল কুমার সুদ ।
চিকিৎসকরা মনে করছেন, কারও কারও ক্ষেত্রে বিপাকে সমস্যা এবং জেনেটিক কারণে অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। বয়স হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লিভারের এই অসুখের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। পুষ্টিতে ঘাটতি থাকলেও লিভারের অসুখ করতে পারে। এছাড়া চিকিৎসকরা মনে করেন, মহিলাদের অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিসিজ হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
এই রোগগুলি প্রতিরোধ করতে কয়েকটি বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। - জীবনধারা পরিবর্তন
- হেপাটাইটিস বি-এর টিকা নেওয়া
- হেপাটাইটিস সি-এর প্রাথমিক লক্ষণ দেখেই সতর্ক হতে হবে।
- মদ্যপান এড়ানো, অ্যালকোহল সেবন সীমিত করা
- চর্বি, চিনি এবং বেশি নুন খাওয়া এড়িয়ে যাওয়া।
- ফল, সবজি, গোটা শস্য এবং চর্বিহীন প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া।
- নিয়মিত ব্যায়াম করা
- সঠিক ওজন বজায় রাখা