নয়াদিল্লি: 'অপূর্বা' (Apurva Movie Review) ছবিতে অসাধারণ কিছুই নেই, কিন্তু যা সাধারণ তাই অসাধারণ। একজন একা মহিলা কী কী করতে পারে? এই ছবিতে বলা হয়েছে যে কোনও মেয়ে যদি একা হয়ে পড়ে তাহলে কেউ কিছু করতে পারে না। এই ফিল্ম দেখে বোঝা যায় যে শুধু দামি সেট (Costly Sets) ও বিদেশী লোকেশনই (Foreign Location) দর্শককে শেষ পর্যন্ত আটকে রাখার একমাত্র পথ নয়। 


ছবির গল্প


এই গল্প অপূর্বা নামের এক মেয়ের যে তাঁর নিজের হবু বরের জন্মদিন পালন করার জন্য আগ্রা যাচ্ছে। যে সরকারি বাসে করে তিনি যাচ্ছিলেন সেই বাসে চার ডাকাত লুঠ চালায় এবং অপূর্বাকে অপহরণ করে নিয়ে চলে যায়। এই চার দুষ্কৃতী অপূর্বাকে ধর্ষণেরও চেষ্টা করে। একবার চেষ্টা করেও সফল হয়নি তারা... তারপর কী হয়? সেটা জানার জন্য ডিজনি প্লাস হটস্টারে আপনাকে এই ছবি দেখতেই হবে। ৯৬ মিনিটের এই ছবি আপনাকে বোঝাবে যে একলা নারীও যদি সাহস করে তাহলে বড় বড় সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। 


অভিনয়


অপূর্বার চরিত্রে অভিনেত্রী তারা সুতারিয়াকে (Tara Sutaria) দেখা গেছে। তাঁর কেরিয়ারের শ্রেষ্ঠ কাজ এটি বলা চলে। নিজের প্রাণ ঢেলে দিয়েছেন তিনি এই চরিত্রে। এতদিন তাঁকে দর্শক গ্ল্যামারাস চরিত্রেই দেখেছেন, তবে এই ছবিতে তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন যে তিনিও অভিনয় পারেন এবং সেটা বেশ ভালই পারেন। এই প্রথম কোনও ছবির নাম ভূমিকায় তাঁকে দেখা গেল এবং চরিত্রের প্রতি যথাযথ বিচার করেছেন তিনি। ভয় পাওয়ার সময় তাঁর অভিব্যক্তি হোক বা কোনও দুষ্কৃতীকে খুন করে ফেলার পরের অপরাধবোধ। তারা সুতারিয়ার অভিনয়ের সঙ্গে একাত্ম বোধ করবেন দর্শক। অভিনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দারুণ কাজ করেছেন। একজন গ্যাংস্টারের ভূমিকায় তাঁকে দেখা গেছে। এবং তাঁর চরিত্র দেখে রীতিমতো ভয় ধরবে দর্শকের মনে, যা তাঁর চরিত্রের জন্য প্রয়োজনীয় ছিল। অত্যন্ত সাবলীল লেগেছে তাঁকে চরিত্রে এবং সেটাই তাঁর অভিনয় গুণ। অন্যদিকে রাজপাল যাদবের অভিনয় খানিক হতাশ করতে পারে। তাঁর এর থেকে অনেক ভাল কাজ আছে এর আগে। এই ধরনের চরিত্র হয় এখন তাঁর করা উচিত না, বা অন্যভাবে করা উচিত। এই ছবিতে তাঁর দক্ষতার অপব্যবহার করা হয়েছে বলা চলে। ধৈর্য্য কারওয়ার কাজ ভাল লাগবে। অভিনয় বেশ বলশালী। সুমিত গুলাটিও গ্যাংস্টারের চরিত্রে ভাল কাজ করেছেন। 


ছবিটি এমনিতে কেমন?


বিশাল মহান কোনও ছবি নয় এটি, তবুও একবার দেখা উচিত। কারণ এই ধরনের ছবি সাধারণ মানুষকে শক্তি জোগায়। আশা দেয়। শুরু থেকেই এই ছবি মোদ্দা কথায় চলে আসে। চরিত্রদের বিশ্লেষণ করতে বেশি সময় নেওয়া হয়নি, যা যথার্থ। কিছু কিছু প্রয়োজনীয় ফ্ল্যাশব্যাক দৃশ্য আছে। কিছুক্ষণের মধ্যে অপূর্বার অপহরণের পরই ছবির গতি বাড়তে থাকে এবং দর্শকের মনে হতে থাকে, যে এরপর কী হবে। এটাই ছবিটির বৈশিষ্ট্য। বেশি টেনে বড় করা হয়নি ছবিটিকে, মাত্র ৯৬ মিনিট এর দৈর্ঘ্য। 


আরও পড়ুন: Tiger 3 Box Office: ৩ দিনেই ২০০ কোটি পার 'টাইগার ৩' ছবির, উৎসবের মরশুমেও বক্স অফিসে সলমন-ঝড়


পরিচালনা


নিখিল নাগেশ ভট্টের (Nikhil Nagesh Bhat) পরিচালনা বেশ ভালই। ওঁর হাত ধরেই তারা সুতারিয়া বেশ ভাল কাজ করেছেন। বড় সেট বা দামী কস্টিউম ছাড়াই ভাল সিনেমা তৈরি করেছেন। কিন্তু হ্যাঁ, রাজপাল যাদবের মতো অভিনেতাকে ঠিক করে ব্যবহার করতে পারেননি। 


সবমিলিয়ে এই ছবি একবার দেখাই যায়। কিন্তু নারীকেন্দ্রিক ছবি সাধারণত কমই তৈরি হয়, আর হলেও তাতেও বিশেষ দম থাকে না। কিন্তু এই ছবি আপনাকে হতাশ করবে না।