নয়াদিল্লি: সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক অযোধ্যা মামলার রায় রিভিউয়ের আবেদন জানানো, চ্যালেঞ্জ করার উদ্যোগের বিরোধিতা করে বিবৃতি দিলেন প্রায় ১০০ নামী মুসলিম ব্যক্তিত্ব। এঁদের মধ্যে শাবানা আজমি, নাসিরুদ্দিন শাহ ছাড়াও একাধিক সমাজকর্মী, আইনজীবী, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, কবি, অভিনেতা, চলচ্চিত্র পরিচালক, মঞ্চাভিনেতা, সংগীতশিল্পী, ইসলাম সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ, কৃষক আছেন। ইস্যুটি জিইয়ে রাখা মুসলিম সমাজের পক্ষে ঠিক হবে না বলে মনে করছেন তাঁরা।
সাত দশকের পুরানো অযোধ্যা মামলায় সর্বোচ্চ আদালতের রায় সম্পর্কে বিবৃতিতে তাঁরা বলেছেন, বিতর্কিত জমিতে রামমন্দির নির্মাণের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের সংবিধান বেঞ্চের সাম্প্রতিক সর্বসম্মত রায় চ্যালেঞ্জ করার যে সিদ্ধান্ত অযোধ্যা বিতর্কের মুসলিম মামলাকারীদের অনেকে নিয়েছেন, আমরা নীচের স্বাক্ষরকারীরা তাতে গভীর ভাবে বিচলিত। তবে দেশের সর্বোচ্চ আদালত তাদের সিদ্ধান্তে পৌঁছতে আইনের চেয়েও বিশ্বাসের ওপর বেশি ভরসা করায় ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও ধর্মনিরপেক্ষ সংগঠনগুলির অসন্তোষের শরিক আমরা।
সুপ্রিম কোর্টের রায় রামলালার পক্ষে গিয়েছে। প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন ৫ বিচারপতির বেঞ্চ রায়ে ২.৭ একরের ওপর গোটা বিতর্কিত জমিই সরকারের গঠন করা ট্রাস্টের হাতে তুলে দিতে বলেছে। ট্রাস্টই ওই জমিতে মন্দির নির্মাণের তদারকি করবে।
যদিও স্বাক্ষরকারীরা বলেছেন, আদালতের আদেশ বিচারের দৃষ্টিতে ত্রুটিপূর্ণ বলে আমরা একমত, কিন্তু আমাদের দৃঢ় ধারণা, অযোধ্যা প্রসঙ্গ টিকিয়ে রাখলে ভারতীয় মুসলিমদের উপকার নয়, বরং ক্ষতিই হবে। বিবৃতিতে তাঁরা বলেছেন, মুসলিম সহ-নাগরিকদের ভেবে দেখতে বলব, তিন দশকের বেশি পুরানো রামজন্মভূমি-বাবরি মসজিদ বিতর্কে তাঁরা কী পেয়েছেন, কী হারিয়েছেন, এতে কি শুধুই একদিকে মুসলিমদের প্রাণ, অসংখ্য সম্পদ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি অন্যদিকে সঙ্ঘ পরিবারের রাজনৈতিক উত্থান হয়নি? আমাদের কি এই তিক্ত অভিজ্ঞতাই হয়নি যে, যে কোনও সাম্প্রদায়িক সংঘাতেই গরিব মুসলিমদেরই মূল্য চোকাতে হয়েছে?