নয়াদিল্লি: বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস নিয়ে মানুষের মনে ভীতি ও আশঙ্কা রয়েছে। তার ওপর, প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় চিন্তা বাড়ছে বৈ কমছে না।


ফলে, করোনা নিয়ে সতর্ক থাকাটা জরুরি, তবে অহেতুক এই নিয়ে দুশ্চিন্তা করা অর্থহীন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর কোনও সময় এধরনের চিন্তা মাথায় চলে আসলে, তখন সেই মানুষগুলির কথা ভাবতে হবে, যাঁরা এই মারণ ভাইরাসের প্রকোপ কাটিয়ে উঠেছেন, যাঁরা এই ভাইরাসকে পরাস্ত করেছেন।


এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আবার সুস্থ হয়ে উঠেছেন, এমন বয়সের মানুষ আছেন, যে বয়সে বলা হচ্ছ, এই ভাইরাস একবার হানা দিলে তা অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। যে বয়সে বাঁচার সম্ভাবনাও ক্ষীণ হয়ে আসে। আর এই সব অসাধারণ ঘটনাবলি আমাদের মনে এটাই বলবে, সবকিছু অন্ধকার নয়। আশার আলো এখানেও রয়েছে।


যেমন ধরা যাক ইংল্যান্ডের ওরস্টারশায়ারের ১০১ বছরের বৃদ্ধ কিথ ওয়াটসন। হাসপাতালে এসেছিলেন অস্ত্রোপচারের জন্য। সেখানে দেখা যায় তিনি করোনা পজিটিভ। এত বয়স হওয়া সত্ত্বেও তিনি রেডিচের আলেকজান্দ্রা হাসপাতালে দুসপ্তাহের চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে ওঠেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁর ঘটনা নিজেদের ফেসবুকে পোস্ট করে। ইংল্যান্ডে যেখানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় লাখ ছুঁই-ছুঁই, সেখানে কিথের কাহিনী সকলকে আশার আলো দিচ্ছে।


আবার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সেনানী ৯৯ বছরের ব্রাজিলীয় আরনান্দো পিভেতা কোভিডে আক্রান্ত হয়েও সুস্থ হয়ে উঠেছেন। মিত্র-বাহিনীর হয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেওয়া এই বৃদ্ধ গত ৬ তারিখ ভর্তি হন হাসপাতালে। ১৪ তারিখ তিনি ছাড়া পেয়েছেন। কাকতালীয়ভাবে, ওইদিন ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রাজিলীয় বাহিনীর ইতালির মন্টেস পুনর্দখলের ৭৫তম বর্ষপূর্তি।


করোনা আক্রান্ত হওয়া ভারতের প্রবীণতম দম্পতি-- থমাস ও মারিয়াম্মা। কেরলের পত্তনমতিত্ত জেলার বাসিন্দা এই বৃদ্ধ দম্পতির মধ্যে করোনা সংক্রমণ ছড়ায় তাঁদের ছেলের থেকে, যিনি কিছুদিন আগেই ইতালি থেকে ফিরেছিলেন। গত ৯ মার্চ ৯৩ বছরের থমাস ও ৮৮ বছরের মারিয়াম্মা ভর্তি হন হাসপাতালে। দুজনেরই হার্ট ও ইউরিনারি সহ একাধিক সমস্যা ছিল। কিছুদিন তাঁদের অবস্থা সঙ্কটজনকও ছিল। কিন্তু, সব বাধা অতিক্রম করে দুজনই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন।


ইতালিতে দুমাসের একটি শিশু আক্রান্ত হয়েছিল করোনায়। বলা হয়েছিল, এটাই ইতালির সর্বকনিষ্ঠ করোনা পজিটিভ। গত ১৮ মার্চ, মায়ের সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল শিশুকেও। অনেকেই মনে করেছিলেন, এত দুদের শিশু, করোনার ধকল নিতে পারবে না। কিন্তু, চমৎকার হয় তো। ৯ এপ্রিল, মা ও শিশু দুজনই সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফেরে।


একইভাবে, মুম্বইয়ের ৬ মাসের ও কোয়েম্বত্তুরের ১০ মাসের দুই শিশুর দেহেও করোনা সংক্রমণ মেলে। সুস্থ হয়ে দুই শিশুই বাড়ি ফেরে।