নয়াদিল্লি: আর জি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় গর্জে উঠেছে গোটা দেশ। এক বা একাধিক যাই হোক না কেন, দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি উঠছে। কিন্তু সর্ষের মধ্যেই যেখানে ভূত লুকিয়ে, সেখানে শাস্তির বিধান কে দেবেন, সেই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। কারণ রিপোর্ট বলছে, দেশের ১৫১ জন সাংসদ ও বিধায়কের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। ধর্ষণে অভিযুক্ত ১৬ জন। (Crimes Against Women)


অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (ADR) বিভিন্ন দলের প্রার্থীদের নির্বাচনী হলফনামা খতিয়ে দেখে এই তথ্য প্রকাশ করেছে। ADR জানিয়েছে, ৪ হাজার ৮০৯ টি নির্বাচনী হলফনামার মধ্যে ৪ হাজার ৬৯৩টি হলফনামা খতিয়ে দেখেছে তারা। ২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ওই হলফনামাগুলি জমা পড়ে, তাতে ১৬ জন সাংসদ এবং ১৩৫ জন বিধায়কের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা রয়েছে। (Association for Democratic Reforms)


এই তালিকায় সবচেয়ে উপরে পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে বলে জানিয়েছে ADR. বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের ২৫ জন সাংসদ এবং বিধায়কের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ। সেখানকার ২১ জন সাংসদ ও বিধায়কের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা ওড়িশার ১৭ জন সাংসদ ও বিধায়কের বিরুদ্ধে রয়েছে নারী নির্যাতনের মামলা। 


কী রয়েছে রিপোর্টে, দেখুন এক ক্লিকে


ADR জানিয়েছে, বর্তমানে ১৬ জন সাংসদ এবং বিধায়ক তাঁদের নামে ধর্ষণের মামলা থাকার কথা নির্বাচন কমিশনারকে জানিয়েছেন। ৩৭৬ ধারায় মামলা রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে, যাতে কমপক্ষে ১০ বছরের সাজা হতে পারে। সর্বোচ্চ যাবজ্জীবনের সাজাও হতে পারে তাঁদের। এঁদের মধ্যে ১৪ জন বিধায়ক রয়েছেন, সাংসদ রয়েছেন দু'জন। একজন নির্যাতিতার উপর বার বার নির্যাতনের অভিয়োগও রয়েছে, যাতে অপরাধের গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। 


যে সমস্ত দলের সাংসদ এবং বিধায়কদের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ রয়েছে, তাদের মধ্যে বিজেপি সবচেয়ে এগিয়ে। বিজেপি-র ৫৪ জন সাংসদ ও বিধায়কের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। কংগ্রেসের ২৩ জন, তেলুগু দেশম পার্টির ১৭, আম আদমি পার্টির ১৩, তৃণমূলের ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের রয়েছে বলে উঠে এসেছে রিপোর্টে। এই মুহূর্তে ক্ষমতাসীন বিজেপি-র পাঁচ জন এবং কংগ্রেসের পাঁচ জন জনপ্রতিনিধির নামে রয়েছে মামলা।


নারী নির্যাতন, ধর্ষণ এবং শ্লীলতাহানির অভিযোগ থাকা নেতাদের নির্বাচনী টিকিট দেওয়ার তীব্র বিরোধিতা করেছে ADR. নিরপেক্ষ তদন্ত করে, ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে তাঁদের বিচারের সুপারিশ করেছে ওই সংস্থা। শুধু তাই নয়, নারী নির্যাতনে অভিযুক্ত নেতাদের নির্বাচনে জয়যুক্ত করার আগে মানুষের মধ্য়ে এ নিয়ে সচেতনতা তৈরি হওয়া প্রয়োজন বলে মত ADR-এর।