নয়াদিল্লি: প্রতিপক্ষের উপর নজরদারি যে কোনও যুদ্ধজয়ের (Israel Gaza War) অন্যতম প্রধান শর্ত। ইজরায়েলের হাইফা শহরের উপর ড্রোনের মাধ্যমে সেই নজরদারি চালানোর ফুটেজ প্রকাশ করল হেজবোল্লা ( Hezbollah releases drone surveillance footage)। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, বিষয়টি বেঞ্জামিন নেতানইয়াহু প্রশাসনের কপালে চিন্তার ঘাম ফুটিয়ে তুলতে পারে। ঠিক কবে এই ফুটেজ জোগাড় করা হয়েছে, এখনও স্পষ্ট নয়। আইডিএফের মুখেও কুলুপ। তবে এই ফুটেজ নিখুঁত হলে, ইজরায়েলের পক্ষে হেজবোল্লার হামলা আটকানো কঠিন হতে পারে। কারণ হাইফার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সমস্ত এলাকা, সমুদ্র, বিমানবন্দরের খুঁটিনাটি ধরা পড়েছে ওই ফুটেজে।
যুদ্ধের যা হাল...
ইজরায়েল-গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই তেল আভিভের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিক্ষেপ করতে শুরু করে হেজবোল্লা। বিশেষত, গত আট মাসে একাধিক বার ইজরায়েলে নজরদার ড্রোন পাঠিয়েছে তারা, এমনও দাবি। এদিন যে ফুটেজ তারা প্রকাশ করে ও ছড়িয়ে দেয়, তাতে আমজনতার বাড়িঘরদোরের পাশাপাশি সেনাঘাঁটির ছবিও স্পষ্ট ধরা পড়েছে। দেখা যাচ্ছে, বন্দরের ছবিও। এমনিতেই বিশ্বখ্যাত এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের নজর এড়িয়ে নজরদার ড্রোনের ঢুকে পড়া সমস্যায় ফেলছে ইজরায়েলকে। হালে সে দেশের সেনাবাহিনীর একটি দলের উপর হামলাও চলে যেখানে এক জনের মৃত্যু হয়। সবটা মিলিয়ে হেজবোল্লার আজকের ড্রোন-ফুটেজ আইডিএফের রক্তচাপ আরও বাড়াতে পারে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, দুরকম ভাবে নজরদার ড্রোন পাঠানোর কাজটি সম্পন্ন করছে হেজবোল্লা। এক, খুব অল্প উচ্চতায় সেগুলি পাঠানো হচ্ছে যাতে তা ধরা না পড়ে। দুই, একাধিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সমস্ত পরিষেবা 'জ্যামিং' করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ১৫০টি ড্রোন আটকানো গেলেও একাধিক ড্রোন যে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছতে পেরেছে, সে কথা মানছে ইজরায়েলও। কী ভাবে এই ড্রোনের নজরদারি আটকানো যায়, সে জন্য ইতিমধ্যে ভাবনাচিন্তাও শুরু হয়েছে।
তবে চিন্তা বাড়লেও যুদ্ধের ঝাঁঝ একচুলও কমায়নি নেতানইয়াহুর সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার, রাফার দু'টি ঐতিহাসিক শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়ে অন্তত ১৭ জনকে মেরেছে আইডিএফ, এমনই দাবি স্বাস্থ্যকর্মীদের। নুসেইরাত এবং বুরেজ, এই দুটি জায়গাপ শরণার্থী শিবিরে হামলা চালানো হয় এদিন। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, ইজরায়েল প্রতিষ্ঠার সময় অর্থাৎ ১৯৪৮ সালের যুদ্ধে যাঁরা পালিয়ে গাজা চলে এসেছিলেন, সেই সব পরিবার ও তাদের উত্তরসূরিরা থাকেন এই দুই জায়গায়। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ট্যাঙ্ক এবং বিমান, দু-জায়গা থেকে মুড়িমুড়কির মতো বোমা নিক্ষেপ করা হয় রাফা-র বিভিন্ন দিকে। আজকের প্রাণহানি নিয়ে সরাসরি মন্তব্য করেনি আইডিএফ। তবে তাদের মতে, নিখুঁত এবং সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতেই বন্দুকধারী প্যালেস্তিনীয়দের উপর অভিযান চালিয়েছে ইজরায়েল।
আম নাগরিকের উপর একটাই দাবি। এবার থামুক সব কিছু, খাবার, পরিশ্রুত পানীয় জল, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল---এগুলি চালু হোক। কিন্তু কেউ কি শোনে তাঁদের কথা?
আরও পড়ুন:মাঝে বিরতি কিছুদিন, ফিরে এল রহস্যজনক Monolith, এবার মরুভূমির বুকে