মুম্বই: করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে মুম্বইয়ের দুটি জেলের বন্দিদের ঠিকানা আপাতত বদলে যেতে চলেছে। এই দুই জেলের বন্দিদের রাখার জন্য মু্ম্বইয়ের দুটি স্কুলকে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাইকুল্লা মহিলা জেল ও আর্থার রোড জেলের বন্দিদের জন্য এই দুটটি স্কুলকে অস্থায়ী জেল হিসেবে গড়ে তোলার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবের সময় বন্দিদের আলাদা রাখতে সরকারি বা বেসরকারি বাড়ি সাময়িকভাবে অধিগ্রহণ করে সেগুলিকে অস্থায়ী জেল হিসেবে গড়ে তুলতে জেলা কালেক্টরকে ক্ষমতা দিয়ে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র বিভাগ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল।
মুম্বই সিটি কালেক্টর রাজীব নিভটকর বলেছেন, বন্দিদের রাখার জায়গা চিহ্নিত করতে স্থানীয় আধিকারিকদের সঙ্গে গত সপ্তাহে এই বৈঠক ডাকা হয়েছিল।
নিভটকর বলেছেন, কোনও অস্থায়ী জেল গড়তেও জেল ম্যানুয়াল অনুযায়ী কিছু শর্ত পূরণের প্রয়োজন রয়েছে। সেজন্য এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়েছিল কারা কর্তৃপক্ষের কাছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্কুল সহ কয়েকটি বিকল্প দেওয়া হয়েছিল। এরমধ্যে দুটি স্কুল চিহ্নিত করা হয়েছে।
আধিকারিকরা জানিয়েছেন, যেহেতু এই ভবনগুলিতে বন্দিদের রাখা হবে, সেজন্য প্রথম অগ্রাধিকার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। জেল ম্যানুয়ালে আলো-বাতাস যাওয়া-আসার মতো ব্যবস্থা, শৌচাগার ও করিডোরের মতো বিষয়ও উল্লেখ রয়েছে।
এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এই স্কুল দুটির মধ্যে একটি বাইকুল্লা জেলের কাছে। ওই স্কুলে যে সব মহিলা বন্দিদের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হবে, তাদের রাখা হবে। এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ওই স্কুল নতুন বন্দিদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টটিনে রাখার কাজে ব্যবহৃত হবে। এরপর তাদের মূল জেলে নিয়ে যাওয়া হবে।
মধ্য মুম্বইয়ের অন্য স্কুলে আর্থার রোড জেলের বন্দিদের রাখা হবে।
বর্তমানে মুম্বই ও ঠানে জেলার সমস্ত বিচারাধীন বন্দিদের নবি মুম্বইয়ের তালোজা কেন্দ্রীয় জেলে ও মহিলা বন্দিদের বাইকুল্লা, ঠানে ও কল্যাণ জেলে রাখা হচ্ছে।
চলতি সপ্তাহের গোড়ায় বম্বে হাইকোর্টে দায়ের করা কারা বিভাগের হলফনামা অনুসারে, মহারাষ্ট্রে ২৩ জেলায় স্কুল, কলেজ ও হস্টেলগুলিকে অস্থায়ী জেল হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে।
এরইমধ্যে বাইকুল্লা মহিলা জেলের ৫৪ বছরের এক করোনা আক্রান্ত বন্দি সুস্থ হয়ে চলতি সপ্তাহে জেলে ফিরে এসেছে। আর্থার রোড জেলের করোনা আক্রান্ত ১২০জন বন্দিও সংক্রমণ-মুক্ত বলে জানিয়েছেন এক আধিকারিক।
তালোজা জেলের করোনা আক্রান্ত তিন বন্দির মৃত্যু হয়েছে বলে হাইকোর্টকে জানানো হয়েছে।
উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া ৯ হাজার বন্দিকে ছাড়ার নির্দেশের পর এখনও পর্যন্ত ১ হাজার জনকে ছাড়া হয়েছে।