নয়াদিল্লি: একনাগাড়ে বৃষ্টি হওয়ায় অন্য বছরের মতো তীব্র দাবদাহ অনুভূত হয়নি। কিন্তু অতিবৃষ্টিতে বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হয়েছে। তবে বিপদ এখনও কাটেনি বলে মত বিশেষজ্ঞদের। বর্ষার মতো এবছর শীতেও ভোগান্তি আছে বলে মনে করছেন তাঁরা। আর এর জন্য সরাসরি ‘লা নিনা’ (La Nina)-কে দায়ী করছেন তাঁরা। (What is La Nina)
চলতি বছরে প্রবল বর্ষণে চারিদিক বিপর্যস্ত। মেঘভাঙা বৃষ্টিতে গোটা গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে কোথাও, কোথাও আবার বন্যা, ধসে শেষ হয়ে গিয়েছে সব কিছু। একই ভাবে প্রবল শীতও ভোগাবে বলে মত আবহবিদদের। তাঁদের মতে, ২০২৫ সাল এযাবৎকালীন ‘শীতলতম’ হতে চলেছে। (La Nina)
ভারতীয় মৌসম ভবন এবং আমেরিকার Climnate Prediction Center জানিয়েছে, ২০২৫ সালে প্রবল শৈত্যপ্রবাহ ভোগাবে ভারতকে। বিশেষ করে উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে শীতের দাপট থাকবে প্রবল। ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষকে হাড় কাঁপানো ঠান্ডা সহ্য করতে হবে এবছর।
এমন পরিস্থিতির জন্য ‘লা নিনা’কেই দায়ী করছেন আবহবিদরা। স্পেনীয় ভাষায় ‘লা নিনা’র অর্থ ‘ছোট্ট মেয়ে’। ‘লা নিনা’ বলতে জলবায়ুর এমন অবস্থাকে বোধানো হয়, যেখানে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা অত্যন্ত কমে যায়, বিশেষ করে নিরক্ষরেখা বরাবর প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জল অত্যন্ত শীতল হয়ে যায়। এর ফলে, প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বের অঞ্চল, বিশেষ করে দক্ষিণ আমেরিকা সংলগ্ন এলাকার জল অস্বাভাবিক রকমের শীতল হয়।
অস্বাভাবিক শীতলতার জেরে বাতাসের গতিপথও বদলে দেয়। ফলে উত্তর ভারতের সমতলে প্রবেশ করে শীতল বাতাস, শৈত্যপ্রবাহের সৃষ্টি করে। ফলে হাড় কাঁপানো ঠান্ডা পড়ে ওই সব অঞ্চলে।
‘লা নিনা’ এ যাবৎ ভারতের উপকারই করে এসেছে। এর প্রভাবে বৃষ্টিতে কোনও ঘাটতি দেখা যায় না। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় না কৃষিকাজ। কিন্তু এবারে তাপমাত্রা অতিরিক্ত নেমে গেলে, উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে ভারী তুষারপাত হতে পারে, যার জেরে কৃষিকাজ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
আর একটি বিশয় ভাবিয়ে তুলছ আবহবিদদের। বিগত কয়েক বছরে ‘লা নিনা’ বেশ খামখেয়ালি আচরণ করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের জেরেই আর তাকে নিয়ে নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না। গ্রিনহাউস গ্যাসের অতিরিক্ত নির্গমন ‘লা নিনা’-র স্বাভাবিক চরিত্রের উপরও প্রভাব ফেলছে। তাই ‘লা নিনা’ সত্ত্বেও বেশ কিছু অঞ্চলে পারদ বেশ উপরের দিকেই থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহবিদরা।