নয়াদিল্লি: পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রত্নভাণ্ডার নিয়ে জোর চর্চা চারিদিকে। সেই আবহেই কেদারনাথ বিতর্ক আরও জোর  পেল। বিরোধী শিবিরের রাজনীতিক বা সরকারের সমালোচকদের কেউ নন, জ্যোতির্মঠের শঙ্করাচার্য, স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দের দাবি, কেদারনাথ মন্দির থেকে ২২৮ কেজি সোনা গায়েব হয়ে গিয়েছে। সোনা গায়েব হওয়াকে সরাসরি দুর্নীতি বলে দাগিয়েছেন তিনি। কেন এ নিয়ে তদন্ত হচ্ছে না, প্রশ্ন তুলেছেন। (Kedarnath Temple Row)


দেশের রাজধানী দিল্লিতে প্রতীকী কেদারনাথ মন্দির গড়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। সেই নিয়ে সোমবার সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেন শঙ্করাচার্য। দিল্লিতে প্রতীকী কেদারনাথ মন্দিরের বিরোধিতা করে বলেন, "শিব পুরাণে ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গের উল্লেখ রয়েছে, নাম, স্থান লেখা রয়েছে। কেদারনাথের ঠিকানাই যখন হিমালয়, তা দিল্লিতে কী করে আনা যায়? রাজনীতিকরা আমাদের ধর্মীয় পরিসরে ঢুকে পড়ছেন।" (Shankaracharya on Kedarnath Gold)


এর পরই কেদারনাথ মন্দির থেকে সোনা গায়েব হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ করেন শঙ্করাচার্য। তিনি বলেন, "কেদারনাথে সোনা নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। সেটা নিয়ে কথা হচ্ছে না কেন? ওখানে দুর্নীতি করে দিল্লিতে কেদারনাথ গড়া হবে? তার পর দুর্নীতি হবে আবারও। ২২৮ কেজি সোনা কেদারনাথ থেকে গায়েব করে দেওয়া হয়েছে। এটা কোথাকার নিয়ম? আজ পর্যন্ত কোনও তদন্ত শুরু হয়নি। ২২৮ কেজি সোনা নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। এর জন্য কে দায়ী, কেন এ নিয়ে তদন্ত হবে না? আর এখন দিল্লিতেই কেদারনাথ গড়া হবে?"



আরও পড়ুন: Supreme Court: সুপ্রিম কোর্টে পিছোল ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলার শুনানি, মামলা ফের কবে উঠবে কোর্টে ?


কেদারনাথ মন্দিরে সোনা নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে বলে গত বছরই অভিযোগ ওঠে। কেদারনাথ মন্দিরের একজন বর্ষীয়ান পুরোহিত সেই নিয়ে মুখ খোলেন। জানান, মন্দিরের গর্ভগৃহে সোনার পাত বসানোর কথা থাকলেও, কার্যক্ষেত্রে তা হয়নি। উপরন্তু ১২৫ কোটি টাকার সোনা গায়েব হয়ে গিয়েছে। এবার সেই নিয়ে সরব হলেন শঙ্করাচার্যও। 


দিল্লিতে কেদারনাথের প্রতীবী মন্দির নির্মাণ ঘিরে তোড়জোড় চলছে। সম্প্রতি দিল্লি এসে ভূমিপুজোও সেরে যান উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামি। সেই নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকেই প্রশ্ন উঠছে। রববিার কেদারনাথ মন্দিরের পুরোহিতরাও মন্দিরের সামনে প্রতিবাদ জানান। কেদারসভা সংগঠনের তরফে অন্য় আরও সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ করে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান ওঠে। 


কেদার সভা সংগঠনের দাবি, তারা মন্দির নির্মাণের বিরোধিতা করছে না। কিন্তু রাজধানীতে কেদারনাথের প্রতীকী মন্দির তৈরি বিরুদ্ধে। কেদারনাথের আদলেই ওই মন্দির তৈরির কথা বলা হচ্ছে, এমনকি কেদারনাথ মন্দির থেকে ইটও নিয়ে যাওয়া হবে, যাতে কেদারনাথ মন্দিরের পবিত্রতা নষ্ট হবে বলে মত ওই সংগঠনের। একই নামের অন্য একটি মন্দির নির্মাণের নেপথ্যে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেও দাবি করছেন অনেকে। এতে সনাতন ধর্মের অবমাননা হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন পুরোহিতদের একাংশ।যদিও দিল্লিতে প্রতীকী কেদারনাথ মন্দির তৈরির হোতা, কেদারনাথ ধাম ট্রাস্টের প্রেসিডেন্ট সুরিন্দর রাউতেলার দাবি, তাঁদের সংস্থা মন্দির তৈরি করছে, উত্তরাখণ্ড সরকার নয়।