ইনদওর: কোভিড-১৯ রোগীদের ওপর প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগের কার্যকারিতা নিয়ে যখন চিকিৎসা মহলে জোর তর্ক-বিতর্ক ও বিশ্লেষণ চলছে, ঠিক সেই সময়ে মধ্যপ্রদেশের ইনদওরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের তরফে দাবি করা হল, সেখানে চারজনের ওপর এই পরীক্ষা করা হয়েছে এবং তাতে ইতিবাচক সাড়া মিলেছে।


ইনদওরের এক স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, শ্রী অরবিন্দ ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেসে ভর্তি ৪ জন কোভিড-১৯ রোগীর শরীরে প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করা হয়। চিকিৎসকদের দাবি, ওই রোগীরা সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছেন।


সংবাদসংস্থার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে হাসপাতালের চেস্ট ডিজিজ বিভাগের প্রধান জানান, চারজনের মধ্যে একজন হলেন ২৬ বছর বয়সী মহিলা। তিনি বলেন, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর রাখা নির্দেশিকা অনুযায়ী গত ২৬ তারিখ ওই মহিলা ও আরও তিন পুরুষ রোগী যাঁদের বয়স ২৩, ৪০ ও ৫৫ বছর-- চারজনকে প্লাজমা থেরাপি দেওয়া হয়।


চিকিৎসকের দাবি, এখন ওই চারজন সম্পূর্ণ সুস্থ। তিনি যোগ করেন, এই পন্থা প্রয়োগ করার আগে, রোগীদের থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। ইনদওর জেলার মুখ্য মেডিক্যাল ও স্বাস্থ্য অফিসারও এই কথা স্বীকার করে নেন। তিনি বলেন, প্লাজমা থেরাপির ফলে, ওই রোগীরা আরোগ্যলাভ করেছেন। জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক আরও জানান, শীঘ্রই সেখানকার সরকারি হাসপাতালেও এই প্রক্রিয়া চালু করা হবে। বলেন, আমার ধারণা, এর ফলে রোগীদের সুস্থ হতে সাহায্য করবে।


এই প্রক্রিয়ায় কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে আরোগ্য লাভ করা ব্যক্তিদের রক্তের প্লাজমা সংগ্রহ করে তা অন্য রোগীর শরীরে ইঞ্জেক্ট করে দেওয়া হয়। তত্ত্ব অনুযায়ী, প্লাজমাতে থাকা অ্যান্টিবডি গ্রহীতার শরীরে প্রবেশ করে সেখানে আরও অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সাহায্য করে। এতে রোগীর শরীরের রোগ-প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।


চিকিৎসকরা জানান, যে চারজনকে প্লাজমা থেরাপি দেওয়া হয়, তাঁরা যে সংক্রমণমুক্ত তার প্রমাণ মিলেছে। ওই চারজনের নমুনা পরীক্ষা নেগেটিভ এসেছে। পাশাপাশি, চারজনের ফুসফুসের সিটি স্ক্যান করে দেখা গিয়েছে, সেখানে কোনও সংক্রমণ নেই। যদিও, এখনই এই নিয়ে বেশি মাতামাতি করতে নারাজ চিকিৎসকরা। তাঁদের মতে, আরও কয়েকজনের ওপর এই পরীক্ষা চালিয়ে তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।