হাওড়া: করোনা-কে জয় করার ক্ষেত্রে নজির তৈরি করল হাওড়ার বকুলতলার বিবেকানন্দ রোডের পাণ্ডা পরিবার।


৮ সদস্যের পরিবারের ৪ জন করোনা আক্রান্ত হন। চারজনের মধ্যে শুধু একজনকে, ৮২ বছরের প্রবীণ সদস্যকে ভর্তি করতে হয় সরকারি হাসপাতালে। বাকিরা হোম আইসোলেশনে থেকেই করোনাকে জয় করেছেন। আজ পরিবারের সকলেই করোনা মুক্ত।


হাওড়ার বাড়ির কর্তা, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বাদলচন্দ্র পাণ্ডা। বয়স ৬৫। তাঁর স্ত্রী ববিতা পাণ্ডা। তাঁদের দুই মেয়ে মৌমিতা পাণ্ডা ও অমৃতা পাণ্ডা। মৌমিতার স্বামী শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদের ২ বছরের একটি ছেলেও রয়েছে।


পরিবার সূত্রে খবর, বাদলচন্দ্রের শ্বশুর সুকুমার পাণ্ডা, স্ত্রী মিতাকে নিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর থেকে চিকিত্‍সককে দেখাতে হাওড়ায় এসেছিলেন গত ১৯ মার্চ। মিতা আলঝাইমার-এর রোগী। লকডাউনের কারণে সুকুমার ও মিতা আটকে পড়েন হাওড়ায় মেয়ে-জামাইয়ের বাড়িতে।


এরপরই এপ্রিল মাসে দেখা দেয় বিপত্তি। পরিবার সূত্রে খবর, ৩০ এপ্রিল সুকুমারের জ্বর আসে। ১ মে বাদল, ববিতা, মৌমিতা আর শিবাজীর জ্বর আসে। সুকুমারের করোনা পরীক্ষা হয় ৯ মে। বাকিদের ১১ মে পরীক্ষা হয়।


সুকুমার, ববিতা, শিবাজী অমৃতার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। বাদলের শাশুড়ি ও ২ বছরের নাতির রিপোর্ট আসে নেগেটিভ। বাদল ও তাঁর মেয়ে মৌমিতার রিপোর্ট আসে ইনকনক্লুসিভ।


সুকুমারকে ভর্তি করা হয় এম আর বাঙুর হাসপাতালে। বাকিরা চিকিত্‍সকের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেন, বাড়িতেই হোম আইসোলেশনে থাকবেন। কঠোরভাবে মানবেন সুরক্ষা বিধি।


গৃহকর্তা বাদলচন্দ্র পাণ্ডা জানান, ছাত্র ও প্রতিবেশীরা খবর নিয়েছে। প্রশাসনও সাহায্য করেছে। ওই কঠিন সময় কীভাবে পার করলেন? মেয়ে অমৃতা বলেন, ডায়েট করতাম, বিকেলে ছাদে যেতাম। গান শুনতাম সবাই।


বাদলের প্রতিবেশীরাও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। একজন বলেন, অনেকেই ভয় পায়। আমরা প্রতিবেশী বলে সুরক্ষা বিধি মেনে যতটা সাহায্য করা সম্ভব ছিল তা করেছি।


চিকিত্‍সকরা বলছেন, অন্য জটিলতা না থাকলে করোনা আক্রান্তদের হোম আইসোলেশনে রেখেও চিকিত্‍সা সম্ভব। সব মিলিয়ে, আক্রান্ত হওয়ার পরেও ভয় না পেয়ে, সতর্ক থেকে, সুরক্ষা বিধি ও চিকিত্‍সা বিধি মেনে করোনাকে জয় করেছে হাওড়ার বকুলতলার পাণ্ডা পরিবার।