নয়াদিল্লি: গত সপ্তাহেই ইরানের তিন তিনটি পরমাণু কেন্দ্রে বিধ্বংসী বাঙ্কার বাস্টার বোমা নিক্ষেপ করে সেগুলি ধ্বংস করেছে মার্কিন সরকার। আর এরপরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে ইরানের (Iran Israel War) সঞ্চিত ৪০০ কেজি ইউরেনিয়ামের ভাণ্ডার এখনও অধরা, যা দিয়ে ১০টি পরমাণু বোমা (Nuclear Weapon) বানিয়ে ফেলা যায় সহজেই।

ইরান যখনই নতুন পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা পুনরায় শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়, তখনই তাদের জন্য একটি জোরদার দর কষাকষির অস্ত্র (Uranium Missing) হিসেবে উঠে আসে এই উধাও হয়ে যাওয়া ৪০০ কেজি ইউরেনিয়াম যা ইরানের সামগ্রিক নিউক্লিয় সম্পদের ৬০ শতাংশ। আর পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য এই মাত্রা ৯০ শতাংশে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।

এমন খবরও পাওয়া গিয়েছে যে মার্কিনি হামলার কয়েকদিন আগেই সম্ভবত ইরান তাদের দেশে মজুত ইউরেনিয়াম সম্পদ অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে। ইজরায়েলি কর্মকর্তারা যদিও এই দাবি করেছেন সংবাদমাধ্যমে। মার্কিনি হামলার আগে তোলা স্যাটেলাইট ছবিতে ইরানের ফোর্দো পারমাণবিক কেন্দ্রের বাইরে ১৬টি ট্রাকের সারি দেখা গিয়েছে যা পাহাড়ের ভিতর নির্মিত এবং বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য অরক্ষিত বলেই মনে করা হচ্ছে। অর্থাৎ সেই সময়েই অনেকে মনে করেছিলেন যে ইরান তাদের গচ্ছিত সম্পদ অন্যত্র সরিয়ে ফেলছে গোপনে। আর এই কারণেই ইজরায়েল রবিবার ভোরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তার বি২ স্পিরিট বোমারু বিমান এবং জিবিইউ ৩৭ বাঙ্কার বাস্টার বোমা নিক্ষেপের অনুরোধ জানায়।

ফোর্দো, নাতানজ এবং ইসফাহান পারমাণবিক কেন্দ্রেই হামলা চালিয়েছিল মার্কিনি বোমারু বিমান। হামলার পরের স্যাটেলাইট ছবিতে তিনটি জায়গাতেই উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি দেখা গিয়েছে, কিন্তু ট্রাকগুলিকে আর দেখা যায়নি। তবে এই ট্রাকগুলি কি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল লুকোনো ইউরেনিয়ামের ভান্ডার ? কিন্তু কোথায় তা স্থানান্তরিত হল তা এখনও স্পষ্ট হয়নি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইজরায়েল দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে এটি প্রাচীন রাজধানী ইসফাহানের কাছে অন্য একটি ভূগর্ভস্থ সংরক্ষণাগারে স্থানান্তরিত হয়েছিল। রবিবার ভোরে ইরানের তিন পরমাণু কেন্দ্রে হামলা চালায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর এর প্রত্যাঘাতে কাতার সহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কিছু জায়গায় মার্কিনি বিমানঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে ইরান। আয়াতুল্লাহ খমেনেইয়ের দেশের পাল্টা প্রত্যাঘাতের আশঙ্কায় নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটনের মত বড় শহরগুলিতেও নিরাপত্তা ও সতর্কবার্তা জারি করা হয়। এর পরে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এখনও তাঁর লেশমাত্র দেখা যায়নি ইরান কিংবা ইজরায়েলে। যুদ্ধবিরতির পরেই ইজরায়েলে হামলা চালিয়েছে ইরান।