নয়াদিল্লি: দেশের অর্থনীতির হাল খারাপ বলে উল্লেখ করে ২০২৫ নাগাদ ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার জিডিপিতে পৌঁছনোর টার্গেট স্পর্শ করার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেন সি রঙ্গরাজন। প্রাক্তন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নরের অভিমত, বর্তমানে বৃদ্ধির হার যেখানে রয়েছে, সেখানে ওই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের প্রশ্নই ওঠে না। কেন্দ্রে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেই নরেন্দ্র মোদী সরকার আগামী ৫ বছরে দেশের অর্থনীতিকে ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে নিয়ে যাওয়ার টার্গেট ঘোষণা করে। কিন্তু সামগ্রিক অর্থনীতির আকাশে উদ্বেগ, সংশয়ের কালো মেঘ জমছে। ফলে নানা মহল ওই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ আদৌ সম্ভব কিনা, প্রশ্ন তুলছে।
বৃদ্ধির হার ক্রমশ নিম্নমুখী হচ্ছে। ২০১৬ অর্থবর্ষের ৮.২ থেকে তা ২০১৯ অর্থবর্ষে হ্রাস পেয়ে ৬.৮ শতাংশ হয়েছে। প্রথম ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার ছিল ৫ শতাংশে, যা গত ৬ বছরে সবচেয়ে কম। দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির সবচেয়ে ভাল হার হতে পারে ৪.৩ শতাংশ। অক্টোবরের পলিসি রিভিউয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কও সম্ভাব্য বৃদ্ধির হার দুমাসে ৯০ বিপিএস কমিয়ে ৬.১ শতাংশ ধরেছে। এই প্রেক্ষাপটেই রঙ্গরাজন বলেছেন, আজ আমাদের অর্থনীতির বহর প্রায় ২.৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। আমরা পরের ৫ বছরে তা দ্বিগুণ করার অর্থাত্ ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার করার কথা বলছি। ওই স্তরে যেতে গেলে বছরে ৯ শতাংশের বেশি হারে বৃদ্ধি অর্জন করতে হবে। ফলে ২০২৫-এ ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছনোর কোনও সম্ভাবনাই নেই।
আইবিএস-আইসিএফএআই বিজনেস স্কুল আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেছেন, দুটো বছর চলে গিয়েছে। এ বছর বৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের কম হতে চলেছে। পরের বছরে দাঁড়াবে প্রায় ৭ শতাংশ। সেখান থেকে অর্থনীতির গতি হয়তো বাড়বে। পাশাপাশি জিডিপি ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছলেও আমাদের মাথাপিছু আয় বাড়বে ৩৬০০ মার্কিন ডলারে, যা এখন ১৮০০ মার্কিন ডলার। ফলে তারপরও আমরা নিম্ন-মাঝারি আয়ের দেশের বন্ধনীতেই পড়ে থাকব। মাথাপিছু আয় ১২০০০ মার্কিন ডলার, এটাই উন্নত দেশের সংজ্ঞা। যদি বছরে ৯ শতাংশ হারে বৃদ্ধি হয়, তাহলেও আমাদের ওই টার্গেট ছুঁতে ২২ বছর সময় লাগবে।