নয়াদিল্লি: কৃষকবন্ধু হিসেবে নিজেদের তুলে ধরতে পিছপা হন না নেতারা। কিন্তু কৃষকদের দুরাবস্থা নিয়ে আদৌ কতটা ভাবিত তাঁরা, তা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ চলতি বছরে মাত্র তিন মাসে মহারাষ্ট্রে আত্মঘাতী হয়েছেন ৭৬৭ জন কৃষক। রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপি জোট সরকারের মন্ত্রী মকরন্দ জাধব খোদ এই পরিসংখ্যান সামনে এনেছেন। (Maharashtra News)
মহারাষ্ট্র বিধানসভায় এই পরিসংখ্যান তুলে ধরেন মকরন্দ। বিধায়ক রোহিত পওয়ার, জিতেন্দ্র অওহদ, বিজয় ওয়াদেত্তিওয়ারের প্রশ্নের জবাবে জানান, জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে ৭৬৭ জন কৃষক আত্মহত্যা করেন। এর মধ্যে ৩৭৬ জন মৃত কৃষকের পরিবার ক্ষতিপূরণ পাওয়ার যোগ্য। সরকারি শর্তাবলী পূরণ না করতে পারায় ২০০ কৃষকের পরিবার ক্ষতিপূরণ পাওয়ার যোগ্য নয়। বাকিদের ক্ষেত্রে তদন্ত চলছে। (Farmers Suicide)
বিদর্ভ, যবতমল, অমরাবতী, অকোলা, বুলধনা, ওয়াসিমে জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে ২৫৭ জন মারা গিয়েছেন, যার মধ্যে ৭৬ জনের পরিবার ক্ষতিপূরণ পেয়েছে। বাতিল হয়েছে ক্ষতিপূরণের ৭৪টি আবেদন। হিঙ্গোলির ২৪ জন কৃষক আত্মঘাতী হন। মকরন্দ জানিয়েছেন, কৃষক আত্মহত্যার ঘটনায় পরিবার পিছু ১ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।
মকরন্দ জানিয়েছেন, মৃতের পরিবারের কারও কাছে যদি কৃষিজমি থাকে, সেই ব্যক্তিও কৃষক বলে গণ্য হন। আত্মহত্যার খবর এলে জেলার এক আধিকারিক পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। সবকিছু খতিয়ে দেখে যোগ্য়-অযোগ্য বাছা হয়, সেই মতো প্রস্তাব আসে। এর পর দ্রুত ক্ষতিপূরণ মেটানোর কাজ হাত দেয় সরকার।
মকরন্দের দাবি, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে ফসল নষ্ট হলে ত্রাণ ও পুনর্বাসন দফতরের তরফে সবরকমের সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হয়। কৃষকদের আত্মহত্যা রুখতে রাজ্য সরকার অর্থনৈতিক সাহায্য প্রকল্প এনেছে, পরিকাঠামোগত উন্নয়নের ব্যবস্থা করেছে। ‘প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মান নিধি যোজনার আওতায় বছরে ১২০০০ টাকা করে দেওয়া হয় কৃষকদের। পাশাপাশি, ‘নমো শেতকরী মহাসম্মান নিধি’র আওতায় আরও ৬০০০ টাকা করে দেওয়া হয়।
এই পরিসংখ্যান সামনে আসতেই বিরোধীরা নিন্দায় সরব হয়েছেন। লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গাঁধীর বক্তব্য, 'প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিজি কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবে দেশের অন্নদাতাদের প্রাণহানি ঘটছে। সরকারি ব্যবস্থাই কৃষকদের প্রাণ কাড়ছে। মোদিজি নিজের প্রচারে ব্যস্ত। প্রতিদিন দেনার দায়ে ডুবে যাচ্ছেন কৃষকরা। বীজের দাম আকাশছোঁয়া, সার অগ্নিমূল্য, ডিজেলে হাত পুড়ছে। অথচ ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের নিশ্চয়তা নেই। ঋণ মকুবের দাবি জানালে, তাও উপেক্ষা করা হচ্ছে। অথচ যাঁদের কোটি কোটি টাকা, তাঁদের ঋণ মাফ করে দিচ্ছে মোদি সরকার। আজই অনিল আম্বানির ৪৮ হাজার কোটি টাকার জালিয়াতির খবর সামনে আসছে।'।