কলকাতা: বৈসরণ ভ্যালি। স্বপ্নের মতো সুন্দর। একদিকে পাহাড়, তার গা দিয়ে নেমে আসা জঙ্গল.. আরেকদিকে সবুজের গালিচা.. কিন্তু এই বৈসরণ ভ্যালিই এখন মৃত্যু উপত্যকা। ২২ এপ্রিল দিনটা চিরকাল কাশ্মীরের ইতিহাসে লেখা থাকবে কালো দিন হয়ে। কারণ কাশ্মীরের বৈসরন ভ্যালিতেই অকালে ঝরে গিয়েছে ২৬ টা প্রাণ। এই বৈসরন ভ্যালিতেই জঙ্গিরা বেছে বেছে হত্যা করেছে ২৫ জন হিন্দু পর্যটককে। ২২ তারিখ সকালেও কেউ জানতেন না, এমন একটা ঘটনা ঘটে যাবে বৈসরণে। কয়েক মিনিট আগেও কেউ জানতেন না, স্বপ্নের মতো সুন্দর উপত্যকা ঝাঁঝরা হয়ে যাবে গুলির শব্দে, লাল হয়ে উঠবে রক্তে।
জানতেন না ঋষি ভট্ট ও। কে এই ঋষি ভট্ট? ইনি পহেলগাঁওতে ঘুরতে আসা সাধারণ এক পর্যটক। ২২ তারিখ দুপুরে যখন বৈসরণ ভ্যালির সৌন্দ্যর্য্য গায়ে মাখছিলেন সবাই, তখন এই ঋষি ভট্ট ও তাঁর পরিবার জিপ লাইনিং করছিলেন বৈসরণ ভ্যালির ওপর দিয়ে। কিন্তু ঋষি যখন ভ্যালির ওপর দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন ভ্যালিতে চলছিল হত্যালীলা। একের পর এক মানুষ ছিটকে পড়ছেন, ফিনকি দিয়ে ছুটছে রক্ত, চলছে গুলি.. এসব কিছুই জানতেন না ঋষি। তিনি জিপ লাইনিং করতে করতে ফ্রন্ট ক্যামেরায় নিজের অভিজ্ঞতা ক্যামেরাবন্দি করছিলেন। আর সেই সময়েই তাঁর ক্যামেরার ব্যাকগ্রাউন্ডে ধরা পড়েছে ভয়াবহ দৃশ্য।
ঋষি ভট্ট বলছেন, 'মোট ৩টে পরিবার ছিল জিপ লাইনিংয়ের জন্য। প্রথমে একটা পরিবারের স্বামী, স্ত্রী আর তাঁদের ছেলে গেলেন। তারপরে দ্বিতীয় পরিবার গেলেন। তারপরে আমাদের যাওয়ার কথা ছিল। আমাদের সময় যখন এল, তখন আমার ছেলে প্রথমে গেল। তারপরে আমার স্ত্রী গেল। তারপরে আমার যাওয়ার কথা। আমি যখন যাত্রা শুরু করেছি, তখন ওখানে গুলি চলা শুরু হয়ে গিয়েছে। ১.২৮ মিনিটে ওখানে গুলি চলা শুরু হয়েছিল। আর ১.২৮-এই ওই ছেলেটা (যিনি জিপ লাইনিং করাচ্ছিলেন) আল্লা হো আকবর.. আল্লা হো আকবর.. আল্লা হো আকবর বলেছিল। ঠিক তারপরেই গুলি চলা শুরু হল। আমি চাই তদন্তে ওই লোকটির দিকে নজর দেওয়া হোক। ও জড়িত নয় তো? তার আগের ২০ মিনিটে যখন ওই ছেলেটা সবাইকে ছাড়ছিল, একবারও আল্লা হো আকবর বলেনি। কিন্তু যখন ফায়ারিং হল, তার এক সেকেন্ড আগেই ও এরকম বলেছিল। আমি দেখেছিলাম নীচে ৫-৬ জনের গুলি লেগেছে। তারপরে আমি যখন নীচে পৌঁছলাম, জিপলাইনিংটা খুলে আমি নিজে গেলাম। স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে ওখান থেকে পালানো শুরু করলাম।'