নয়াদিল্লি: নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল সংসদের দুই কক্ষে পাশ হওয়ার পর অসম সহ উত্তরপূর্বাঞ্চলে অশান্তি, হিংসাত্মক বিক্ষোভের জেরে উদ্ভূত পরিস্থিতির ওপর মার্কিন প্রশাসন নজর রাখছে বলে জানালেন আমেরিকার বিদেশ দপ্তরের জনৈক মুখপাত্র। ভারতের সংবিধান ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে, আমেরিকা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকারগুলি রক্ষা করতে ভারতকে আবেদন করছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মুখপাত্রটি বলেছেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ঘিরে চলতি ঘটনাবলীর দিকে গভীর মনোযোগ রয়েছে আমাদের। ধর্মাচরণের স্বাধীনতার প্রতি সম্মান, আইনের চোখে সমান মর্যাদা আমাদের দুটি গণতন্ত্রেরই মৌলিক নীতি।
লোকসভার পর রাজ্যসভায় ছাড়পত্র পাওয়া নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে বলা হয়েছে, ২০১৪-র ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান-এই তিন প্রতিবেশী দেশ থেকে ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে ভারতে পালিয়ে আসা অ-মুসলিম শরণার্থীরা এদেশের নাগরিকত্ব পাবেন। এজন্য আগের আইন মোতাবেক ১১ বছরের পরিবর্তে ৫ বছর ভারতে থাকলেই নাগরিকত্বের দাবিদার হবেন তাঁরা।
পাশাপাশি ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের সম্ভাব্য প্রভাব, প্রতিক্রিয়ার দিকে নজর রাখছে রাষ্ট্রপুঞ্জও। রাষ্ট্রপুঞ্জের সেক্রেটারি জেনারেলের ডেপুটি মুখপাত্র ফারহান হক সাংবাদিক সম্মেলনে সেক্রেটারি জেনারেল এ ব্যাপারে কিছু বলবেন কিনা, জানতে চাওয়া হলে বলেন, আমরা অবগত রয়েছি যে ভারতীয় সংসদের নিম্ন ও উচ্চকক্ষে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ করেছে, এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে যেসব উদ্বেগ-উত্কন্ঠা শোনা যাচ্ছে, তাও জানি। রাষ্ট্রপুঞ্জও আইনটির সম্ভাব্য ফল খতিয়ে দেখছে।
হক আরও বলেন, তিনি এই বিষয়টির উল্লেখ করতে চান যে, রাষ্ট্রপুঞ্জের দূত সহ তার মানবাধিকার সংক্রান্ত ব্যবস্থার কিছু লোকজন ইতিমধ্যেই এই আইনের চরিত্র নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, মানবাধিকার দপ্তর থেকেই তা দেখা যাচ্ছে।
রাষ্ট্রপুঞ্জ ওই আইনের সম্ভাব্য প্রভাব বিশ্লেষণ, পর্যালোচনা শেষ করার পর কোনও বিবৃতি প্রকাশ করা হবে কিনা, প্রশ্ন করা হলে হক বলেন, আমাদের প্রতিক্রিয়া কী ধরনের হওয়া উচিত, সেটাও দেখতে হবে। এখনও আমরা তার বৈশিষ্ঠগুলি খতিয়ে দেখার প্রক্রিয়া চালাচ্ছি।
এই আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান আন্তোনিও গুয়েত্রেসের মুখপাত্র একথা জানিয়ে বলেছেন, আমি কয়েকদিন আগেও বলেছি, সর্বজনীন মানবাধিকার সংক্রান্ত দাবিসনদে উল্লিখিত নীতি সহ রাষ্ট্রপুঞ্জের কিছু মৌলিক নীতি আছে এবং সেগুলি ঊর্ধ্বে তুলে ধরা হবে বলেই আশা।