নয়াদিল্লি: ১৭টি বিরোধী দল রাজ্যসভা চেয়ারম্যান এম বেঙ্কাইয়া নাইডুকে চিঠি দিয়ে কোনওরকম স্ক্রুটিনি না করেই তড়িঘড়ি সংসদে বিল পাস করানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে বলল, চলতি, প্রতিষ্ঠিত রীতি-রেওয়াজ থেকে বিচ্যুতি হচ্ছে। কংগ্রেস, তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি, আরজেডি, টিডিপি, সিপিআই, সিপিএম সহ এই দলগুলি চিঠিতে বেঙ্কাইয়ার হস্তক্ষেপ চেয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, আমরা স্বাক্ষরকারী দলগুলি যেভাবে সরকার সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটি বা সিলেক্ট কমিটিকে দিয়ে কোনওরকম পরীক্ষা না করিয়েই তড়িঘড়ি বিল পাশ করাচ্ছে, তা নিয়ে আমাদের গভীর উদ্বেগ, অসন্তোষ জানাতে চাইছি। প্রতিষ্ঠিত রীতিনীতি ও আইন প্রয়োগ করার স্বাস্থ্যকর ঐতিহ্য থেকে মৌলিক বিচ্যুতি ঘটানো হচ্ছে। বিরোধীরা তথ্য দিয়েছে, ১৪-তম লোকসভায় ৬০ শতাংশ বিল সংসদীয় কমিটিতে খতিয়ে দেখার জন্য পাঠানো হয়েছিল, পঞ্চদশ লোকসভায় পাঠানো হয়েছিল ৭১ শতাংশ বিল। কিন্তু ১৬-তম লোকসভায় স্ক্রুটিনির জন্য পাঠানো হয়েছে মাত্র ২৬ শতাংশ বিল। আর এবার সপ্তদশ লোকসভায় ১৪টি বিল প্রথম অধিবেশনে ইতিমধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছে। এগুলির কোনওটিই সংসদীয় স্ক্রুটিনির জন্য স্ট্যান্ডিং কমিটি বা সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো হয়নি। আরও ১১টি বিল পেশ, আলোচনা, খতিয়ে দেখা, বিচার-বিবেচনা, পাশ হওয়ার জন্য বকেয়া রয়েছে।
এ ব্যাপারে বেঙ্কাইয়ার হস্তক্ষেপ চেয়েছে তারা।
চিঠিতে বলা হয়েছে, সংসদীয় কমিটিগুলি বিল খতিয়ে দেখে, আলোচনা করে, প্রস্তাবিত আইনের বিষয়বস্তু ও গুণমান সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে কাজ করে। সেক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের মতামত শোনা, জানা বহুদিনের একটা প্রতিষ্ঠিত রীতি ছিল।
বিরোধী দলগুলি আরও বলেছে, ১৩, ১৪, ১৫ ও ১৬-তম লোকসভার প্রথম অধিবেশনগুলির একেকটিতে প্রায় ১০টি করে সিটিং হয়। তাতে সংসদীয় স্ক্রুটিনি হওয়া হাতেগোনা কিছু বিল পাশ হয়েছিল।
সভায় সংক্ষিপ্ত মেয়াদের আবেদন পেশে অনুমতি দেওয়ার দাবিও করেছে বিরোধীরা।
বেঙ্কাইয়াকে বিরোধীরা বলেছে, রাজ্যসভায় বিরোধীদের কণ্ঠস্বর দমন করা হবে না, এটা আপনাকে সুনিশ্চিত করার আবেদন করছি। আইন প্রনয়ণের প্রয়োজনীয়তা আমরা বুঝি, নিজেদের দায়িত্বও জানি, কিন্তু সদস্যদের স্বাধিকার ও নিয়মনীতি, প্রতিষ্ঠিত রীতি-রেওয়াজ খর্ব করার সরকারের যে কোনও প্রয়াস, আমাদের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রনেতারা যেমনটা চেয়েছিলেন, সংসদের ভূমিকাকে খর্ব করবে।