নয়াদিল্লি: যে ৪৯ জন বুদ্ধিজীবী, বিদ্দজন দেশে সংখ্যালঘুদের গণপিটুনি দিয়ে মারার ঘটনা বাড়ছে বলে অভিযোগ তুলে উদ্বেগ, ক্ষোভ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশ্যে সম্প্রতি খোলা চিঠি প্রকাশ করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে পাল্টা বিবৃতি দিলেন ৬১ জন খ্যাতিমান মানুষজন, যাঁদের মধ্যে আছেন অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত, গীতিকার প্রসূন জোশী, ধ্রুপদী নৃত্যশিল্পী তথা সাংসদ সোনাল মানসিংহ, বীণাবাদক পন্ডিত বিশ্বমোহন ভট্ট, চলচ্চিত্র পরিচালক মধুর ভান্ডারকর, বিবেক অগ্নিহোত্রী। কৌশিক সেন, শ্যাম বেনেগাল, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, মণিরত্নম, শুভা মুদগল, অপর্ণা সেন, রামচন্দ্র গুহর মতো বিদ্দজন, নানা ক্ষেত্রের কৃতী মানুষজন সংখ্যালঘু নিধন, ‘জয় শ্রীরাম ধ্বনি’ দিয়ে মারধরের অভিযোগ তুলে নিন্দায় সরব হয়েছিলেন চিঠিতে, প্রধানমন্ত্রীকে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করেছিলেন। পাল্টা তাঁদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী মোদির নেতৃত্বে সমর্থন জানানো এই ব্যক্তিত্বদের অভিযোগ, মোদিকে লেখা চিঠিতে ‘বেছে বেছে নিন্দা, ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন’ ওই বুদ্ধিজীবীরা, ‘মিথ্যা ভাষ্য’ দিয়েছেন। এতে তাঁরাও বিস্মিত, ক্ষু্ব্ধ।


প্রধানমন্ত্রীকে লেখা খোলা চিঠিটিকে ‘চক্রান্ত’, ‘দেশের বদনাম করার’ চেষ্টা বলেছেন কঙ্গনারা, চিঠির স্বাক্ষরকারীদের দেশের ‘স্বঘোষিত রক্ষাকর্তা’, ‘বিবেকের ঠিকাদার’ বলে কটাক্ষও করেছেন। বলেছেন, বাছাই করা ক্ষেত্রে ক্ষোভ জানিয়ে লেখা এই নথি আমাদের কাছে মিথ্যা ভাষ্য ছড়ানোর চেষ্টা বলে মনে হয়, যার উদ্দেশ্য দেশ ও জনগণ হিসাবে আমাদের সমবেত কার্যকলাপের গণতান্ত্রিক রীতিনীতি, বোধকে অপমান করা। সংবাদ সংস্থা এএনআই প্রকাশিত বিবৃতিতে কঙ্গনারা প্রশ্ন তুলেছেন, আদিবাসীরা, সমাজের প্রান্তিক মানুষজন মাওবাদীদের নিশানা হলে তখন কেন এই নামীদামীরা নীরব থাকেন।

কঙ্গনাদের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, মনে হয়, ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে ভারতের ঐক্য ও সংহতিকে বিকিয়ে দেওয়া যায় বলে ওই স্বাক্ষরকারীরা মনে করেন। কিন্তু আমাদের কাছে ভারতের ঐক্য, সংহতি, তার স্বাধীনতা সবচেয়ে দামী, যিনিই তাকে চ্যালেঞ্জ করবেন, বিপন্ন বা ধ্বংস করতে চাইবেন, সেজন্য চক্রান্ত করবেন, তাকে প্রতিরোধ করা প্রয়োজন।
গত বুধবার দেশে সাম্প্রতিককালে বেশ কয়েকটি গণপিটুনির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে ৪৯ বুদ্ধিজীবী প্রধানমন্ত্রীকে এধরনের অপরাধে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজাদানের ব্যবস্থা নিতে আবেদন করেন। তাঁদের চিঠিতে বলা হয়, মুসলিম, দলিত ও অন্য সংখ্যালঘুদের পিটিয়ে মারা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত।
পাল্টা কঙ্গনারা বলেছেন, ওই খোলা চিঠি আমাদের কাছে প্রান্তিক মানুষের দেওয়া রায়কে উপহাস করা, মিথ্যা ভয়ের বাতাবরণ তৈরি ও গোটা সমাজের সব অংশের সামগ্রিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে ভারতের অগ্রগতি বানচাল করার চেষ্টা বলে মনে হয়। এটা পরিষ্কার দেশের বদনাম করার প্রয়াস। আমরা এই ষড়যন্ত্রের নিন্দা করছি।