নয়াদিল্লি: সোমবার লকডাউনের ২০তম দিনে পা রাখল ভারত। ২৫ মার্চ দেশজুড়ে লকডাউনের কথা ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ মোদি। যাতে মারণ ভাইরাসের সংক্রমণ রুখে দেওয়া যায়। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকার থেকে করোনা মোকাবিলায় করা হয়েছে এক গুচ্ছ পদক্ষেপ।


২০ দিনে করোনা ভাইরাসের হাত থেকে মুক্তি পেতে কোন ২০টি পদক্ষেপ করল কেন্দ্র, দেখে নিন এক ঝলকে:

১. সম্প্রতি আরোগ্য সেতু বলে একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করেছে সরকার। যে অ্যাপের মাধ্যমে একদিকে যেমন করোনা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা যাবে, তেমনই করোনা মোকাবিলায় সরকারের সমস্ত পদক্ষেপ জানা যাবে।

২. রবিবার কেন্দ্রীয় তেলমন্ত্রকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, গরিব যে সমস্ত পরিবার ৫ কেজির রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করে, আগামী তিন মাস তাদের মোট আটবার বিনামূল্যে রিফিল করার সুযোগ দেওয়া হবে। যে সমস্ত দরিদ্র পরিবার ১৪.২ কেজির সিলিন্ডার ব্যবহার করে, তাদের জন্য নিখরচায় তিনবার রিফিলের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।

৩. গোটা দেশে ২০ লক্ষ ‘সুরক্ষা স্টোর্স’ খোলার পরিকল্পনা করেছে সরকার। যে দোকানে সমস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পাওয়া যাবে। দোকানের কর্মীদের করোনা মোকাবিলার বিশেষ প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে।

৪. কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল রবিবার একটি ওয়েব পোর্টাল চালু করেছেন। করোনা প্রতিরোধে সরকারের পদক্ষেপ থেকে শুরু করে প্রযুক্তি ব্যবহার করে ও বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে করোনা মোকাবিলার সমস্ত তথ্য পাওয়া যাবে এই পোর্টালে।

৫. আগামী তিন মাস উজ্জ্বলা প্রকল্পের আওতায় ৮ কোটি ৩০ লক্ষ দরিদ্র মহিলাকে বিনামূল্যে এলপিজি সিলিন্ডার রিফিল করে দেওয়া হবে।

৬. কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক ঘোষণা করেছে, লকডাউন পরিস্থিতিতে ব্যক্তি ও বাণিজ্য গোষ্ঠী মিলিয়ে মোট ১৮ হাজার কোটি টাকার আয়কর ছাড় দেওয়া হবে।

৭. স্বনির্ভর মহিলা গোষ্ঠীগুলোকে কোল্যাটারাল-মুক্ত ঋণের পরিমাণ বাড়িয়ে ২০ লক্ষ টাকা করা হবে।

৮. প্রধানমন্ত্রী কিষাণ যোজনায় লকডাউন চলাকালীন ৬ কোটিরও বেশি কৃষক উপকৃত হয়েছেন। কৃষকদের দেওয়ার জন্য প্রথম পর্বে ১৩,৮৫৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে।

৯. এমজিএনআরইজিএ-র আওতাভুক্তদের মজুরি ১৮২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০২ টাকা করা হয়েছে। এতে শ্রমিকেরা প্রত্যেক মাসে ২ হাজার টাকা অতিরিক্ত উপার্জন করবেন।

১০. গত মাসে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকার ত্রাণ তহবিল তৈরির কথা ঘোষণা করেছেন।

১১. প্রভিডেন্ট ফান্ড অ্যাকাউন্ট থেকে তিন মাসের বেতন তুলে নেওয়া যাবে।

১২. জাতীয় সমাজ কল্যাণ প্রকল্পে ২ কোটি ৮২ লক্ষ বয়স্ক, বিধবা ও বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য ১৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

১৩. ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষের আয়কর জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়িয়ে ৩০ জুন করা হয়েছে। দেরিতে আয়কর জমা দেওয়ার সুদ ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৯ শতাংশ করা হয়েছে।

১৪. ২ কোটিরও বেশি নির্মাণকর্মীদের আর্থিক সহায়তার জন্য ৩০৬৬ কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে।

১৫. মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসের জিএসটি জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়িয়ে ৩০ জুন করা হয়েছে। বার্ষিক ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত লেনদেন হয়, এরকম সংস্থার ক্ষেত্রে কোনও সুদ বা লেট ফি নেওয়া হবে না।

১৬. জন ধন প্রকল্পের আওতাভুক্ত প্রায় ২০ কোটি মহিলা তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৫০০ টাকা করে পেয়েছেন। অর্থমন্ত্রক জানিয়েছে, এই খাতে মোট বরাদ্দ ৯,৯৩০ কোটি টাকা।

১৭. প্যান কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ড সংযুক্তির সময়সীমা ৩১ মার্চ থেকে বাড়িয়ে ৩০ জুন করা হয়েছে।

১৮. সমাজের বিভিন্ন স্তরে আর্থিক সহায়তার জন্য বাড়তি ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

১৯. প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনার আওতায় এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকের জন্য ১ কোটি ২০ লক্ষ মেট্রিক টন দানা শস্য বিলি করা হবে।

২০. করোনা মোকাবিলায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রত্যেকের জন্য মাথা পিছু ৫০ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যবীমা মঞ্জুর করা হয়েছে।

সোমবারই দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ছাপিয়ে গিয়েছে। মারণ ভাইরাসের মোকাবিলায় কেন্দ্রের পাশাপাশি তৎপর প্রত্যেকটি রাজ্যের সরকারও।