কলকাতা : বঙ্গ বিধানসভার আগে গোটা রাজ্যে ঘুরে ঘুরে 'খেলা হবে' স্লোগানকে তৃণমূলের ভোটের অস্ত্র করে তুলেছিলেন, এবার আগামী লোকসভার আগেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাজি সেই শব্দবন্ধই। তৃণমূলের শহিদ দিবস পালনের মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারির সুরে বললেন, 'বিজেপিকে যতদিন না দেশ থেকে তাড়াচ্ছি, রাজ্যে রাজ্যে খেলা হবে।' আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই নয়াদিল্লি যাচ্ছেন বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। রাজনৈতিক মহলের পর্যবেক্ষণ, আগামী লোকসভা ভোটকে এখন থেকেই পাখির চোখ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই লক্ষ্যেই রাজ্যের গণ্ডি টপকে গোটা দেশজুড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভার্চুয়াল বক্তব্য সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে।


দিল্লিতে বাদল অধিবেশনের মাঝে শরদ পাওয়ার, পি চিদম্বরমের মতো নেতারা বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর শহিদ দিবসের বক্তব্য শুনেছেন। আর তাদের সামনেই কিছুদিন আগের সোশ্যালে ট্রেন্ডিং 'বেঙ্গলি প্রাইম মিনিস্টার' প্রসঙ্গ উসকে বিজেপি বিরোধী প্রধান মুখ হওয়ার পথে পা বাড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশজুড়ে বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করার চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'সব নেতাদের বলছি, ফ্রন্ট তৈরি করুন। পরের সপ্তাহে দু’তিনদিনের জন্য দিল্লি যাব। গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করব। শরদ পাওয়ারদের অনুরোধ, দিল্লিতে বৈঠকের আয়োজন করুন। সেই বৈঠকে আমিও থাকব, আলোচনা হোক।' বিজেপির উদ্দেশে আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়ানোর পাশাপাশি বিরোধী ঐক্য গড়ার বার্তায় তিনি জোড়েন, 'বিজেপি শুধু দলকে গুরুত্ব দেয়। জনগণের জন্য কাজ করলেই বাধা দেয়। আমাদের ফ্রন্ট ক্ষমতায় এলে দেশজুড়ে নিখরচায় রেশন-চিকিৎসা। পুরো দেশে এখন বেকারত্ব-হিংসার জেরে হতাশা। আমরা নতুন সরকারের নামে আলো আনব।'


এদিকে, পেগাসাস ফোন ট্যাপিং বিতর্ক নিয়েও বিজেপির উদ্দেশে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানান তিনি। সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের দুই মন্ত্রীর ফোনও ট্যাপিংয়ের তালিকায় থাকার জেরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খোঁচা, 'নিজেদের মন্ত্রীদেরও ভরসা করে না, এমন দল।' এর মাঝেই তিনি জোড়েন, 'পেগাসাসের নামে আমার-আপনার ফোন ট্যাপ হচ্ছে। আপনি বাড়িতে কখন ঘুমাচ্ছেন সেটাও ফোনে দেখা যাবে। কাউকে ফোন করতে পারি না, ফোন ট্যাপ হয়। আমার ফোন ট্যাপ হচ্ছে, রেকর্ড করা হচ্ছে। আমার ফোনের ক্যামেরা ঢেকে দিতে হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ধ্বংস করছে বিজেপি। গণতান্ত্রিক অধিকার শেষ করে দিচ্ছে ওরা। মানুষকে হেনস্থা করছে। ওরা একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছে। আমি চিদাম্বরমজির সঙ্গে ফোনে কথা পর্যন্ত বলতে পারি না। কারণ, আমার ফোন ট্যাপ হয়ে যাবে। চাইলেও শরদ পাওয়ারজির সঙ্গে কথা বলতে পারি না। দিল্লি বা অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গেও কথা বলতে পারি না। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলতে পারি না। কেন ? গরিবদের টাকা দেওয়ার পরিবর্তে, গুপ্তচরবৃত্তির জন্য টাকা খরচ করছেন !স্পাইইং, বিটিং, কিলিং অ্যান্ড টকিং টু মাচ, ডুইং নাথিং-এই চলছে।'


মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য-