নয়াদিল্লি: পুলওয়ামা হামলার পর ভারতের আক্রমণের আশঙ্কায় পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকে শয়ে শয়ে ফিদাঁয়ে ও তাদের প্রশিক্ষকদের বালাকোটের শিবিরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পাহাড়ের মাথায় জঙ্গলে ঘেরা এই শিবির পাঁচ তারা রিসর্টের মতো। মঙ্গলবার ভোররাতে নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছিল শিবিরের প্রত্যেকেই। তাদের দেশের এতটা ভেতরে ঢুকে যে ভারত আক্রমণ চালাবে, তা ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারেনি পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বিভাগ। তাদের ধারণা ছিল, নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালাতে পারে ভারত। সেজন্যই বালাকোটের শিবিরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল জঙ্গি ও তাদের প্রশিক্ষকদের। এতে ভারতীয় বাহিনীর হাতে আক্রমণ চালানোর মতো ‘সহজ লক্ষ্যবস্তু’ চলে আসে। এমনটাই খবর সূত্রের।
সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, বালাকোট শিবিরে ভারতীয় বায়ুসেনার নিখুঁত আক্রমণে প্রায় সাড়ে তিনশ জঙ্গি নিকেশ হয়েছে।
১৪ ফেব্রুয়ারির পুলওয়ামা হামলার দায় স্বীকার করেছিল পাকিস্তানের জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদ। বালাকোটে  সেই জইশের সবচেয়ে বড় শিবিরে কমপক্ষে ৩২৫ জঙ্গি ও ২৫-২৭ জন প্রশিক্ষক ছিল।
ভারত যে গোয়েন্দা তথ্য পায়, তাতে জানা যায় যে, জইশ তাদের বহু প্রশিক্ষণাধীন জঙ্গি, হার্ডকোর অপারেটিভ ও প্রশিক্ষকদের বালাকোট শিবিরে সরিয়ে নিয়েছে। ওই শিবিরে প্রায় ৫০০ থেকে ৭০০ জনের থাকার বন্দোবস্ত রয়েছে। সেখানে একটি সুইমিং পুল এবং রাধুনি ও সাফাইকর্মীরাও রয়েছে।


ওয়েস্টার্ন ও সেন্ট্রাল কম্যান্ডের বেশ কয়েকটি এয়ারবেস থেকে একই সময়ে আকাশে ওড়ে ফাইটার ও অন্যান্য বিমান। সূত্রের খবর, এতগুলি বিমান কোথায় যাচ্ছে, তা ভেবে ধাঁধায় পড়ে গিয়েছিলেন পাক প্রতিরক্ষা আধিকারিকরা। বিমানের ঝাঁক থেকে স্বল্প কয়েকটি বিমান সোজা বালাকোটে পাড়ি জমায়, যেখানে ঘুমন্ত জঙ্গিরা ভারতীয় বোমা নিক্ষেপের সহজ লক্ষ্যবস্তু হয়।
সূত্রের খবর, বালাকোট যে লক্ষ্য তা ওরা ধারণাই করতে পারেনি..যখন ছবি প্রকাশ্যে এল, তখন দেখা গিয়েছে এক সময়ের জমজমাট জঙ্গি শিবির শুধু খণ্ডহর (ধ্বংসস্তুপ)।
বালাকোট নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে ৮০ কিমি দূরে অ্যাবোটাবাদের কাছে। এই অ্যাবোটাবাদেই আল-কায়দা নেতা ওসামা বিন লাদেন লুকিয়েছিল। সেখানে পাক সামরিক বাহিনীর অগোচরে গোপন অভিযান চালিয়ে লাদেনকে হত্যা করেছিল মার্কিন বাহিনী।