নয়াদিল্লি: পশ্চিমবঙ্গে এই প্রথম লোকসভা ভোট হবে সাত দফায়। গত ১৫ বছরের পরিসংখ্যান বলছে, পশ্চিমবঙ্গে এত দফায় ভোট এর আগে কখনও হয়নি। সাল যত বেড়ছে, ভোটের দফাও তত বেড়েছে। ২০০৪ সালে পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা ভোট হয়েছিল মাত্র এক দফায়। ২০০৯ সালে তা বেড়ে হয় ৩ দফা। ২০১৪ সালে আরও বেড়ে পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা ভোট হয় পাঁচ দফায়।
লোকসভার মতো একই বিধানসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, যত সময় এগিয়েছে, ততই ভোটের দফা বেড়েছে পশ্চিমবঙ্গে। ২০০৬ সালে পশ্চিমবঙ্গে বিধাসভা ভোট হয় ৫ দফায়। কিন্তু, ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোট হয় ৬ দফায়। ২০১৬ সালে আরও বেড়ে পশ্চিমবঙ্গে ৭ দফায় হয় বিধানসভা ভোট।
পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও উত্তরপ্রদেশ-- শুধুমাত্র এই ৩টি রাজ্যে ৭ দফায় ভোট হবে। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল- মহারাষ্ট্রে যেখানে ৪৮টি লোকসভা আসন। সেখানে এবার ভোট হচ্ছে ৪ দফায়। অথচ পশ্চিমবঙ্গে ৪২ লোকসভা আসন হওয়া সত্ত্বেও, ভোট সাত দফায়।


নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করেছ--


১১ এপ্রিল প্রথম দফায় ভোট হবে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারে।
১৮ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় ভোটগ্রহণ দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি এবং রায়গঞ্জ - এই ৩ আসনে
২৩ এপ্রিল, তৃতীয় দফায় ভোটগ্রহণ হবে বালুরঘাট, মালদা উত্তর, মালদা দক্ষিণ, জঙ্গিপুর, মুর্শিদাবাদ
২৯ এপ্রিল, চতুর্থ দফায় ভোটগ্রহণ হবে বহরমপুর, কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, বর্ধমান পূর্ব, বর্ধমান-দুর্গাপুর, বোলপুর, আসানসোল, বীরভূম
৬ মে, পঞ্চম দফায় ভোটগ্রহণ হবে বনগাঁ, ব্যারাকপুর, হাওড়া, উলুবেড়িয়া, আরামবাগ, শ্রীরামপুর, হুগলি
১২ মে, ষষ্ঠ দফায় ভোটগ্রহণ হবে তমলুক, কাঁথি, ঘাটাল, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বিষ্ণুপুর
১৯ মে, সপ্তম অর্থাৎ শেষ দফায় ভোটগ্রহণ হবে দমদম, বারাসাত, বসিরহাট, জয়নগর, মথুরাপুর, ডায়মন্ড হারবার, যাদবপুর, কলকাতা উত্তর, কলকাতা দক্ষিণ


পশ্চিমবঙ্গে এবার রেকর্ড দফায় ভোট ঘোষণার পরই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছে তৃণমূল। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, বাংলার মানুষের হৃদয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় ৭ দফা হোক বা ১৪ দফা, কিছু আসে যায় না। তবে এতদিন ধরে নির্বাচন হলে সাধারণ মানুষের কাছে চাপের বিষয়। রমজান মাসে নির্বাচন হলে মানুষের কষ্ট। রমজান মাসে কার স্বার্থে ভোট? এই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। রাজ্য বিজেপি অবশ্য সাত দফায় ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে, তৃণমূলকে কটাক্ষ করছে। কংগ্রেস-সিপিএম একসুরে বলছে, মানুষ যেন নিজের ভোটটা নিজে দিতে পারে। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বাধীন নির্বাচন যদি নিশ্চিত করতে পারে কমিশন, তাহলে পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আমাদের লড়াই ভিত্তি পাবে।
রাজ্যে মোট পোলিং বুথ ৭৮,৭৯৯। স্বচ্ছতার স্বার্থে এই প্রথম ১০০ শতাংশ পোলিং বুথে ভিভিপ্যাট মেশিন ব্যবহার করা হবে বলে ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ২৩ মে লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা।