তিরুঅনন্তপুরম: মোবাইল ফোন চুরির মিথ্যা অভিযোগে হেনস্থার ঘটনায় ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে কেরল হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল আট বছর বয়সি একটি মেয়ে। তার অভিযোগ, তাকে ও তার বাবাকে মোবাইল ফোন চুরির মিথ্যা অভিযোগে হেনস্থা করেন এক মহিলা পুলিশ আধিকারিক। তাদের প্রকাশ্যে অপমান করা হয়। বেশ কয়েকবার আর্জি জানানো হলেও, সংশ্লিষ্ট মহিলা পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই এবার আদালতের কাছে বিচার চাইছে তারা।
কেরল হাইকোর্টে দায়ের করা আবেদনে মেয়েটি বলেছে, মিথ্যা অপবাদে প্রকাশ্যে হেনস্থার জেরে সে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তার কাউন্সেলিংও করাতে হয়। সেই ঘটনা এখনও তাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে।
যে অভিযোগ নিয়ে মেয়েটি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে, সেটি গত ২৭ অগাস্টের। সেদিন মেয়েটি ও তার বাবা কেরলের তিরুঅনন্তপুরমের আত্তিনগাল অঞ্চলে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে একটি বিশাল ট্রেলারে ইসরোর বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে যাওয়া দেখছিল। সেই সময় রেজিতা নামে এক মহিলা পুলিশ আধিকারিকের মোবাইল ফোন হারিয়ে যায়। তিনি দাবি করেন, মেয়েটি ও তার বাবা মোবাইল ফোন চুরি করেছেন। কারণ, তারা পুলিশের গাড়ির কাছে দাঁড়িয়েছিল। ওই মহিলা পুলিশ আধিকারিক এ-ও দাবি করেন, মেয়েটির বাবা মোবাইল ফোন চুরি করে মেয়ের হাতে দিয়েছেন। মেয়েটি সেই মোবাইল ফোন লুকিয়ে রেখেছে। মোবাইল ফোন না পেলে তাদের দু’জনকে থানায় নিয়ে যাওয়ার হুমকিও দেন ওই মহিলা পুলিশ আধিকারিক। পরে অবশ্য পুলিশের গাড়ি থেকে মোবাইল ফোন খুঁজে পান ওই মহিলা আধিকারিক। সেই সময় সেখানে ছিলেন বহু মানুষ। তাঁদের মধ্যে একজন গোটা ঘটনা ক্যামেরাবন্দি করেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করেন। সেই ঘটনা ভাইরাল হয়।
৩১ অগাস্ট কেরলের পুলিশ বিভাগের প্রধান অনিল কান্তের সঙ্গে দেখা করেন মেয়েটির বাবা। তিনি বলেন, মিথ্যা অপবাদে প্রকাশ্যে অপমানিত হয়ে তাঁর মেয়ে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাই সংশ্লিষ্ট পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কেরলের দক্ষিণাঞ্চলের আইজি হর্ষিতা আত্তালুরিকে এই ঘটনার তদন্ত করার নির্দেশ দেন পুলিশ বিভাগের প্রধান। তদন্তের পর ওই মহিলা পুলিশ আধিকারিককে বদলি করা হয়। কিন্তু পরে দেখা যায়, তাঁকে আরও ভাল জায়গায় বদলি করা হয়েছে। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে কোনওরকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি।
ওই মহিলা পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে মেয়েটি, তার বাবা এবং পরিবারের লোকজন সেপ্টেম্বরে কেরলের সচিবালয়ের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হয়। কিন্তু তারপরেও পুলিশ বিভাগ কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় পরিবার আদালতেরক দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।