নয়াদিল্লি ও কলকাতা: জামনগরে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ( ইডি)-র অফিসে পৌঁছলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কয়লা পাচারকাণ্ডে অভিষেককে তলব করেছে ইডি। সকাল ১১ টার কিছু আগেই তিনি পৌঁছন।  গতকালই রাজধানীতে পৌঁছে যান অভিষেক। এদিন জামনগরে ইডি-র অফিসে যাওয়ার আগে তিনি বলেন,‘যে কোনও তদন্তের মুখোমুখি হতে আমি প্রস্তুত।দেশের সব নাগরিককেই তদন্তে সহযোগিতা করা উচিত।’


এদিন নির্ধারিত সময়ের ১০ মিনিট আগেই ইডি-র দফতরে পৌঁছে যান অভিষেক। সাড়ে এগারোটা থেকে অভিষেকের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে বলে ইডি সূত্রে জানা গেছে।  জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে জানা গেছে। কয়লাকাণ্ডে আর্থিক তছরুপের মামলার তদন্ত করছে ইডি। এই মামলাতেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তৃণমূল সাংসদকে ডেকে পাঠানো হয়। 


কয়লাকাণ্ডে ইডির তলবে দিল্লি যাওয়ার আগে গতকালও অভিষেক বলেছিলেন, যে কোনও তদন্তের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত। একইসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ অভিযোগ করেছিলেন যে, রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা না করতে পেরে কেন্দ্রীয় এজেন্সির মাধ্যমে প্রতিহিংসার কৌশল নিয়েছে বিজেপি।  
তাঁর এই মন্তব্যের পাল্টা বিজেপি বলেছিল, ইডির কাজ ইডি করছে। এদিন বিজেপি রাজ্য সভাপতি  দিলীপ ঘোষ বলেছেন,নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করুন। সঙ্গীরা ধরা পড়েছেন, তাই ওঁকেও ডেকে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু বদলা নিতেই সিআইডি-কে দিয়ে ডাকা হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীকে।


তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল বলেছিলেন যে, কেউ বলছে ১০০ কোটি, কেউ বলছে ২০০ কোটি, কেউ বলছে ৫০০ কোটি, কেউ বলছে ১০০০ কোটি, ১০ পয়সার কোনও লেনদেন প্রমাণ করতে পারে বা জনসমক্ষে আনতে পারে, আমার পিছনে ইডি-সিবিআই লাগাতে হবে না, ফাঁসির মঞ্চ করে বলুন, আমি মৃত্যুবরণ করতে রাজি। 


সোমবার কয়লা পাচারকাণ্ডে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের মুখোমুখি হতে দিল্লি রওনা দেন অভিষেক । তার আগে কয়লাকাণ্ডে ইডির সক্রিয়তা নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগে সরব হন তিনি। অভিষেক বলেছিলেন, আমি যে কোনও তদন্তের জন্য প্রস্তুত।  ভোটে হেরে গেছে, তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা না করতে পেরে এখন প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতিতে নেমেছে, তদন্তকারী সংস্থাগুলোকে পিছনে লাগিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক চরিতার্থ করা ছাড়া এদের আর কোন কাজ নেই।


প্রতিহিংসার অভিযোগ খারিজ করে পাল্টা বিজেপির দাবি, তদন্তের স্বার্থে যা করার করছে ইডি। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছিলেন, এটা এজেন্সি বলতে পারবে৷ আমরা বলতে পারব না। ওরা এক কান্না কাঁদছেন। কাল সান্ত্বনা পুরস্কার পেয়েছেন। 


গত ১ সেপ্টেম্বর নারদকাণ্ডে চার্জশিট পেশ করে ইডি। তাতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নাম না থাকায়, এই নিয়ে প্রশ্ন তোলে শাসক দল। এদিন সেই প্রসঙ্গ টেনেই কেন্দ্রের শাসকদলকে আক্রমণ করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।তিনি বলেন, যাদেরকে হাত পেতে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে, নির্লজ্জভাবে তখন সিবিআইয়ের চোখে ছানি পড়ে যায়, টিভির পর্দায় যাদেরকে কাগজ মুড়ি দিয়ে কত লোককে দেখা গিয়েছে.. সুদীপ্ত সেন যাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন, একজন এখানে বিজেপি বিরোধী দলনেতা, আরেকজন হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আসামের মুখ্যমন্ত্রী, বিজেপির দ্বিচারিতা মানুষ দেখছে।


পাল্টা দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, আমরা তো দেখেছি কীভাবে টাকা নিয়েছেন। তারপরও বলছেন ভদ্রলোক, তো ভদ্রলোক প্রমাণ করুন।