কলকাতা: ওড়িশায় নিয়ম করে প্রায় প্রতি বছরই ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ে। গত দু’দশকে বেশ কয়েকবার ঝড়ের ফলে উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলির মানুষজন ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছেন। অনেক বাড়ি ভেঙে পড়েছে, বহু মানুষের মৃত্যুও হয়েছে। ফলে ঝড়ের পূর্বাভাস থাকলেই ওড়িশা উপকূলের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।


চাঁদিপুরে সমুদ্রের কাছেই একটি হোটেলের এক কর্মী জানালেন, ‘লকডাউন চলার জন্য এখন হোটেলে কোনও পর্যটক নেই। করোনার জেরে এমনিতেই বেশি মানুষ বাড়ির বাইরে বেরোচ্ছেন না, ঝড়ের পূর্বাভাস থাকায় রাস্তায় লোক আরও কমে গিয়েছে। সমুদ্রের কাছাকাছি প্রায় কেউই নেই। আমরাও নিরাপদ জায়গায় আছি। আশা করি ঝড়ের ফলে খুব একটা ক্ষয়ক্ষতি হবে না।’


ওড়িশার কাসাফলের বাসিন্দা গৌতম কুমার দাস জানালেন, ‘এখনও ঝড় শুরু হয়নি। তবে ঝড়ের আগেই কিছুটা প্রভাব দেখা যাচ্ছে। আজ সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সমুদ্রে জলস্তর বেড়েছে। আজ রাত থেকে ঝড় শুরু হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। কাল বেলা ১১টা নাগাদ ঝড় আছড়ে পড়তে পারে। সাইক্লোন সেন্টারে স্থানীয় লোকজনকে রাখা হয়েছে। যাঁদের কাঁচা বাড়ি এবং যাঁদের বাড়ি সমুদ্রের কাছে, তাঁদের সবাইকে সাইক্লোন সেন্টারে রাখা হয়েছে। করোনার জন্য এখন লকডাউন চলছে। ফলে বাইরের লোকজন কেউ নেই। সবাই স্থানীয় বাসিন্দা। ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আমরা সবাই আতঙ্কে আছি।’


দাগারার বাসিন্দা কালাচাঁদ বারিক জানালেন, ‘আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, কাল বেলার দিকে বালেশ্বরে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড়। আমাদের এখানে আশা করি ঝড়ের প্রভাব তেমন একটা পড়বে না। বৃষ্টি হচ্ছে মাঝে মাঝে, তবে আকাশ পরিষ্কার। সমুদ্রের অবস্থা ঠিক আছে। খুব একটা ঢেউ নেই। করোনার জন্য এখন এখানে পর্যটক নেই। সমুদ্রের কাছাকাছি অঞ্চল একদম ফাঁকা।’


আবহাওয়া দফতর সূত্রে পাওয়া শেষ খবর অনুযায়ী, কাল বেলা ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে ওড়িশার ভদ্রক জেলার ধামড়া বন্দরের কাছাকাছি অঞ্চলে ভূমি স্পর্শ করবে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। সেই সময় ঝড়ের গতি থাকতে পারে ঘণ্টায় ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ গতি হতে পারে ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার। তবে ভূমিতে আছড়ে পড়ার পর ধীরে ধীরে ঝড়ের গতি কমতে থাকবে। ওড়িশার জগৎসিংহপুর, কেন্দ্রাপাড়া, ভদ্রক, বালাসোর, পুরী, কটক, খুরদা, জাজপুর জেলায় ঝড়ের প্রভাব পড়তে পারে। পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়তে পারে।