নয়াদিল্লি: একাধিক দাবিতে সংগঠিত কৃষকদের মিছিল করে রাজধানীতে ঢোকার কর্মসূচি ব্যর্থ করতে পুলিশি আচরণের তীব্র নিন্দা করল অল ইন্ডিয়া কিষাণ সভা (এআইকেএস)। আজ হাজার হাজার কৃষক নিষেধাজ্ঞা ভেঙে নয়াদিল্লির দিকে এগতে থাকলে দিল্লি-উত্তরপ্রদেশ সীমান্তেই তাদের বাধা দেয় পুলিশ। ট্র্যাক্টর, ট্রলি নিয়ে মিছিল করে আসা কৃষকরা ব্যারিকেড ভেঙে এগতে থাকলে জল কামান, কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। জায়গায় জায়গায় পুলিশ-কৃষক খণ্ডযুদ্ধ হয়, যাতে এক এএসআই সমেত সাত পুলিশকর্মী জখম হন বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। বিরোধী শিবির থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে নৃশংস আচরণের অভিযোগ করা হলেও পুলিশের দাবি, তারা ন্যূনতম বল প্রয়োগ করেছে। ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের পদযাত্রা কর্মসূচিতে শামিল চাষিদের একাংশ আচমকা মারমুখী, হিংস্র হয়ে ওঠে। কিষাণ সভার অভিযোগ, এ দেশের কৃষকরা কেন্দ্র ও বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির সরকারের হাতে আক্রান্ত হচ্ছে। তাদের ওপর বর্বরোচিত হামলা করা হয়েছে। মোদী সরকার মহাত্মা গাঁধীর আদর্শের প্রতি যে আনুগত্যের কথা বলে, তা স্রেফ মুখের কথা। কুম্ভীরাশ্রু বর্জন করছে ওরা। দাবিদাওয়া পেশ করতে গাঁধী জয়ন্তীতে শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে আসা কৃষকদের ওপর বর্বর হামলা করল পুলিশ।
এদিন কৃষকদের মিছিল থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ কথা বলেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী রাধা মোহন সিংহ ও আরও কয়েকজনের সঙ্গে। তারপর কেন্দ্রীয় কৃষি প্রতিমন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত প্রতিবাদী কৃষকদের নেতাদের সঙ্গে দেখা করে আশ্বাস দেন, মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে একটি কমিটি গঠিত হবে। কমিটি তাদের দাবিগুলি খতিয়ে দেখবে। কিন্তু মিছিলের ডাক দেওয়া সংগঠন ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের প্রধান নরেশ টিকায়েত জানিয়ে দেন, তাঁরা এই প্রতিশ্রুতিতে সন্তুষ্ট নন। তাই আন্দোলন চলবে। তিনি বলেন, আমরা আলোচনা করে ভবিষ্যতের কর্মপন্থা স্থির করব। আমি একা সিদ্ধান্ত নিতে পারি না, কমিটি ঠিক করবে।
কৃষকদের দাবিগুলির মধ্যে আছে স্বামীনাথন কমিশন রিপোর্টের সুপারিশগুলি কার্যকর করা, ১০ বছরের বেশি পুরানো ট্র্যাক্টর চাষের কাজে ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, আখ কেনার বকেয়া প্রাপ্য ধাপে ধাপে মিটিয়ে দেওয়া, চিনির বর্ধিত দাম ও ন্যূনতম সহায়ক মূল্য প্রদান।
কংগ্রেস, বাম সহ নানা বিরোধী দল কৃষক মিছিল রুখতে পুলিশি ‘দমনপীড়নের’ তীব্র নিন্দা করেছে।