নয়াদিল্লি: লোকসভায় পক্ষে ভোট দিয়ে নাগরিকত্ব(সংশোধন) বিল, ২০১৯ পাশে সাহায্য করলেও রাজ্যসভায় বিলের ব্যাপারে কী অবস্থান নেবে, তা নিয়ে ধন্দ শিবসেনার কথায়। আগামীকাল রাজ্যসভায় পেশ হচ্ছে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় নির্যাতন থেকে বাঁচতে পালিয়ে ভারতে আসা অ-মুসলিমদের ভারতের নাগরিকত্ব দিতে আনা বিলটি। তার প্রাক্কালে মঙ্গলবার শিবসেনা সুপ্রিমো উদ্ধব ঠাকরের জানিয়ে দিলেন, কিছু বিষয় স্পষ্ট না হলে আমরা বিল সমর্থন করব না। নতুন নাগরিকত্ব পাওয়া লোকজনের ২৫ বছর ভোটাধিকার আটকে রাখতে হবে, বিলের আওতায় শ্রীলঙ্কার তামিলদেরও রাখতে হবে, কেন্দ্র তাঁদের এই শর্ত মানলেই বিতর্কিত বিল সংসদের উর্ধ্বকক্ষে পাশ হতে সাহায্য করবেন বলে জানিয়েছেন উদ্ধব।
তিনি বলেছেন, কোনও নাগরিকের এই বিল নিয়ে ভয়, সংশয় থাকলে অবশ্যই তা দূর করা উচিত। তারাও আমাদের নাগরিক, ফলে তাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া জরুরি। ওদের বিচারে যারাই ভিন্ন মত জানাবে, তারা দেশদ্রোহী। আমরা রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধন বিলে কিছু বদলের সুপারিশ করেছি। শুধু বিজেপিই দেশের কথা ভাবে, এটা একটা ভুল ধারণা।
প্রসঙ্গত, শিবসেনা মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস, এনসিপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার চালাচ্ছে। ওই দুদলই নাগরিকত্ব সংশোধন বিলের কট্টর বিরোধী।
উদ্ধব বলেন, একটা ধারণা ছড়ানো হয়েছে যে, যারাই বিলের ওপর কেন্দ্রের পক্ষে ভোট দিয়েছে, তারাই দেশপ্রেমিক, আর বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া লোকজন দেশের শত্রু। এই বিভ্রম থেকে বেরতে হবে আমাদের। আমরা গতকাল অন্য দেশে অত্যাচারিত লোকজনকে বুকে টেনে নেওয়ার জন্য বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছি। কিন্তু আমরা বেশ কিছু প্রশ্ন তুলেছি। জাতীয় সুরক্ষা থেকে শুরু করে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে স্থানীয়দের অধিকার নিয়ে তোলা সেইসব প্রশ্নের জবাব মিলবে বলে ভেবেছিলাম। সেগুলির উত্তর না পেলে রাজ্যসভায় সিএবি সমর্থন করব না। সিএবি সমর্থন বা বিরোধিতা করছে, এমন প্রতিটি দলই জাতীয় স্বার্থে স্বচ্ছতা চাইছে। স্বচ্ছতা বহাল রাখতেই হবে। গতকাল শিবসেনা বিলে সমর্থনের ব্যাপারে কয়েকটি শর্ত দিলেও ভোটাভুটির সময় সেগুলি নাকচ হয়ে যায়।


দলীয় মুখপত্র সামনা-য় বিলটি ‘ভারতে অদৃশ্য বিভাজন ঘটাবে’ বলে কড়া মন্তব্য করলেও শেষ পর্যন্ত শিবসেনা লোকসভায় তার পক্ষে ভোট দেওয়ায় রাজনৈতিক মহলে চমক তৈরি হলেও দলের সাংসদ অরবিন্দ সাবন্ত সাফাই দিয়েছেন, ‘দেশের স্বার্থে’ই তাঁদের এই সমর্থন।