নয়াদিল্লি: তীব্র ছাত্র বিক্ষোভ, প্রতিবাদের ফলশ্রুতিতে প্রস্তাবিত হস্টেল ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নিল দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ) কর্তৃপক্ষ। অন্যান্য ফি বাড়ানোর পদক্ষেপও প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিচালক কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক ভাবে পশ্চাত্পদ অংশের পড়ুয়াদের জন্য একটি বিশেষ আর্থিক সহায়তা স্কিম চালুর প্রস্তাবও দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কমিটি। ছাত্র বিক্ষোভের আশঙ্কায় এদিন এক্সিকিউটিভ কমিটির বৈঠক হয় ক্যাম্পাসের বাইরে।
কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের শিক্ষা সচিব আর সুব্রহ্মণ্যম ট্যুইটে এই ঘোষণা করে বলেছেন, এবার পড়ুয়াদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার পালা। প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে হস্টেল ফি প্রচুর বাড়িয়েছে কর্তৃপক্ষ, এই অভিযোগ তুলে গত ২ সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে তারা। বর্ধিত ফি প্রত্যাহারের দাবিতে রাজধানীর রাস্তায় নামে জেএনইউয়ের পড়ুয়ারা। তাদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় পুলিশের। সেদিন ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন।


একটি সূত্রের দাবি, আংশিক হস্টেল ফি বৃদ্ধির প্রস্তাব তুলে নেওয়া হয়েছে জেএনইউয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকে। সংশোধিত সিদ্ধান্ত অনুসারে, একজনের জন্য হস্টেল রুম ভাড়া হবে ২০০ টাকা, ২ জনের জন্য ১০০ টাকা। কশন মানি হিসাবে জমা রাখতে হবে ৫৫০০ টাকা। সার্ভিস চার্জ ধরা হবে ১৭০০ টাকা। পাশাপাশি অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল ঘরের পড়ুয়াদের আর্থিক সাহায্যও দেওয়া হবে। এর আগে একজনের জন্য হস্টেল রুম ফি মাসে ২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬০০ টাকা, দুজন শেয়ার করে থাকলে মাসে ভাড়া ১০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করা হয়। এছাড়া, ১৭০০ টাকার ফি-ও যোগ করা হয়। কশন মানি ৫৫০০ থেকে বেড়ে হয় ১২ হাজার টাকা। এর বিরুদ্ধে সোমবার আন্দোলনে নামে জেএনইউ ছাত্র সংসদ। জেএনইউয়ের রেজিস্ট্রার আগে এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, বছরে জল, বিদ্যুত্, পরিষেবা বাবদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ কোটি টাকা খরচ হয়। সেটা ইউজিসি থেকে পাওয়া সাধারণ তহবিল থেকে দিতে হয় বিশ্ববিদ্যালয়কে।
এর পাশাপাশি গত ১৯ বছরে একবারও ফি বাড়ানো হয়নি বলেও দাবি করে জেএনইউ কর্তৃপক্ষ। পাল্টা পড়ুয়াদের দাবি ছিল, ফি বাড়ানোর আগে তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।
চলতি সপ্তাহের গোড়ায় কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী রমেশ পোখরিয়ালকে জেএনইউয়ের পড়ুয়াদের বিক্ষোভের জেরে বসন্ত কুঞ্জের এআইসিটিই ক্যাম্পাসে আটকে থাকতে হয়। সেখানেই হয় সমাবর্তন অনুষ্ঠান। উপাচার্য্য তাদের সঙ্গে দেখা করতে চাননি বলে অভিযোগ তুলে ক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা স্লোগান দেয়, খরচ বহনসাধ্য শিক্ষা চাই, নইলে সমাবর্তন নয়।