নয়াদিল্লি: মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার এক সপ্তাহ পরেও সরকার গঠন নিয়ে সাসপেন্স অব্যাহত রয়েছে। বিজেপি ও শিবসেনা জোট বেঁধে ভোটে লড়াই করেছিল। সরকার গঠনের জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও দুই জোট শরিকের মধ্যে টানাপোড়েন তুঙ্গে উঠেছে। এজন্যই এখনও পর্যন্ত রাজ্যে নতুন সরকার গঠন হয়নি। অন্যদিকে, রাজ্যের রাজনৈতিক সমীকরণের চালচিত্রের অদলবদলের সম্ভাবনা নিয়ে জোর জল্পনা চলছে। এরইমধ্যে এনসিপি সূত্রের খবর মিলিছে যে, দল শিবসেনার সঙ্গে রাজ্যে সরকার গড়তে রাজি। দিল্লিতে গতকাল সোমবার এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার জোট শরিক কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে বৈঠক করেন। এই বৈঠকের পর পাওয়ারের দলের উপরমহলের সূত্র জানানো হয়েছে যে, এনসিপি শিবসেনার সঙ্গে সরকার গড়তে প্রস্তুত। কিন্তু এ ব্যাপারে কংগ্রেস কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি এবং সনিয়া প্রস্তাবটি নিয়ে বিবেচনার জন্য পাওয়ারের কাছে আরও সময় চেয়েছেন।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, দল শিবসেনার সঙ্গে সরকার গঠনের ব্যাপারে দ্বিধাগ্রস্ত। মহারাষ্ট্রের কংগ্রেস নেতাদের একাংশ বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে বাইরে রাখতে শিবসেনাকে সমর্থনের পক্ষপাতী। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিষয়টি নিয়ে কার্যত ধর্মসঙ্কটে পড়েছেন। এজন্যই এ ব্যাপারে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কোনও সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়নি।
কংগ্রেস সূত্র অনুসারে, দল মনে করছে যে, ক্ষমতার ভাগ নিয়ে শিবসেনা বিজেপির সঙ্গে দরকষাকষি করছে। ওই সূত্র অনুসারে, কংগ্রেস মনে করছে যে, শিবসেনা যদি বিজেপির সঙ্গে জোট ভাঙার ব্যাপারে আন্তরিক হয়, তাহলে তা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা উচিত।
সূত্রের খবর, সরকার গঠনের জন্য জনাদেশ পায়নি কংগ্রেস-এনসিপি। এ কথা বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য শরদ পাওয়ারের কাছে সময় চেয়েছেন সনিয়া।
সনিয়ার সঙ্গে বৈঠকের পর পাওয়ারও বলেছিলেন যে, সরকার গঠনের জনাদেশ আমরা পাইনি। কিন্তু ভবিষ্যতে কী হবে তা বলতে পারব না।
পাওয়ার বলেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি আরও একবার সনিয়ার সঙ্গে দেখা করবেন। তিনি আরও জানান যে, সরকার গঠনের জন্য শিবসেনার পক্ষ থেকে এখনও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি। তিনি বলেন, সরকার গঠনের দায়িত্ব বিজেপি-শিবসেনার। কিন্তু দুই দলের চলতি মতবিরোধ গুরুতর বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জানা গেছে, পাওয়ার মুম্বইতে গিয়ে দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। এরপর দিল্লিতে এসে সনিয়ার সঙ্গে দেখা করবেন। এরপরই চিত্র পরিষ্কার হবে।
শিবসেনাকে সমর্থনের ইস্যুতে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা প্রমোদ তিওয়ারি বলেছেন, সরকার গঠনের দায়িত্ব বিজেপি-শিবসেনার। কিন্তু যা কিছু হচ্ছে, তা শরিকদের প্রতি বিজেপির মনোভাবের কারণেই হচ্ছে। বিজেপি-শিবসেনা সরকার গঠন করতে ব্যর্থ হলে সেক্ষেত্রে মহারাষ্ট্রের আঞ্চলিক দলগুলি পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করবে।
এর থেকে ইঙ্গিত মিলেছে যে, বিজেপি ও শিবসেনার আলোচনা ভেস্তে গেলে এনসিপি মাস্টারস্ট্রোক দিতে পারে।