নয়াদিল্লি: ঋণের কিস্তির টাকা বাকি। সেই টাকা না পাওয়ায় যাত্রীসহ গোটা বাস নিজেদের দখলে নিল বেসরকারি ঋণ প্রদানকারী সংস্থার কর্মীরা। জোর করে চালক ও কন্ডাক্টরকে নামিয়ে দিয়ে বাসটি নিয়ে নিজেরাই এগোতে শুরু করে অপহরণকারীরা। শেষপর্যন্ত অবশ্য এটাওয়ার কাছে বাসটির খোঁজ পায় পুলিশ। যাত্রীদের কোনও ক্ষতি হয়নি। তাঁদের অন্য একটি বাসে করে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।


এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে উত্তরপ্রদেশের আগরায়। পুলিশ সূত্রে খবর, বাসটির রেজিস্ট্রেশন উত্তরপ্রদেশে। তবে বাসটি মধ্যপ্রদেশের গ্বালিয়রের একটি ট্র্যাভেল এজেন্সির। মঙ্গলবারই বাসটির মালিকের মৃত্যু হয়। এরই মধ্যে ঘটে গেল চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা। হরিয়ানার গুরুগ্রাম থেকে মধ্যপ্রদেশের গ্বালিয়রে যাচ্ছিল বেসরকারি বাসটি। মঙ্গলবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ দক্ষিণ বাইপাসে রাইভা টোলপ্লাজার কাছে দু’টি গাড়ি নিয়ে ৮-৯ জন যুবক বাসটি আটকায়। তারা নিজেদের ওই বেসরকারি ঋণ প্রদানকারী সংস্থার কর্মী বলে দাবি করে। তারা বাসের চালককে নেমে যেতে বলে। তবে তাদের কথায় কান না দিয়ে চালক বাস নিয়ে এগোতে থাকেন। কিন্তু তাঁর পক্ষে বেশিদূর যাওয়া সম্ভব হয়নি। বাসটি আটকে চালক ও কন্ডাক্টরকে একটি গাড়িতে তুলে নেয় অপহরণকারীরা। তারা দিল্লি-কানপুর হাইওয়ে দিয়ে এগোতে শুরু করে। বাসটিতে ৩৪ জন যাত্রী ছিলেন। অপহরণকারীরা যাত্রীদের বলে চুপ করে বসে থাকতে, তাঁদের কোনও ক্ষতি হবে না।

আগরার সিনিয়র পুলিশ সুপার বাবলু কুমার জানিয়েছেন, ‘বুধবার ভোর চারটে নাগাদ বাসটির চালক ও কন্ডাক্টরকে কুবেরপুর অঞ্চলের কাছে হাইওয়েতে নামিয়ে দেয় অপহরণকারীরা। এরপর তাঁরা থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। এরই মধ্যে গ্বালিয়রের তিন ব্যক্তি অভিযোগ দায়ের করেন, একটি ঋণ প্রদানকারী সংস্থার কর্মীরা গুরুগ্রাম থেকে পান্নার দিকে যাওয়ার সময় বাসটি দখল করে নেয়। এই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।’

আগরার সিনিয়র পুলিশ সুপার আরও জানিয়েছেন, ‘বাস অপহরণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত প্রদীপ গুপ্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ও মোটরসাইকেলে চড়ে ফহেতাবাদ অঞ্চল দিয়ে যাচ্ছিল। তখন তাকে ধরার চেষ্টা করেন পুলিশকর্মীরা। তবে সহজে ধরা দেয়নি প্রদীপ। এনকাউন্টারের পরেই তাকে ধরা সম্ভব হয়েছে। তার পায়ে গুলি লাগে। গ্রেফতার করার পর তাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান পুলিশকর্মীরা। বাস অপহরণের সময় সে যে গাড়িটিতে ছিল, সেটি এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।’

উত্তরপ্রদেশের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব অবনীশ অবস্তি জানিয়েছেন, ‘বেসরকারি ঋণ প্রদানকারী সংস্থার কর্মীরা বেআইনিভাবে বাসটি নিজেদের দখলে নেন। বাসটির চালক, কর্মী ও যাত্রীরা নিরাপদেই আছেন।’