নয়াদিল্লি: উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে ৩ বছরের এক শিশুকন্যার নৃশংস হত্যাকাণ্ড সারা দেশজুড়েই জনমানসে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। বলিউডের বহু তারকাই এই ঘটনায় গ্রেফতার দুই অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তাপ্পাল টাউনশিপে বাড়ি থেকে ১০০ মিটার দূরে গত ২ জুন একটি আবর্জনা স্তুপ থেকে উদ্ধার হয় মেয়েটির ক্ষতবিক্ষত দেহ। গত ৩০ মে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল সে।
রাস্তার কুকুরের দল ওই আবর্জনা স্তুপে কোনও কিছু নিয়ে কামড়াকামড়ি করছিল। তা দেখে মানুষের দেহাংশ বলে মনে হয়। এরপরই পুরো ঘটনা জানা যায়। একটা হাত কাটা অবস্থায় একটি আস্তাকুঁড় থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
প্রাথমিক তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, টাকাপয়সা সংক্রান্ত বিবাদেই ওই মেয়েটিকে খুন করা হয়েছে। মেয়েটির বাবা দুই অভিযুক্ত জাহিদ ও আসলামকে ৪০ হাজার টাকা ধার দিয়েছিলেন। ওই টাকা পুরোটা ফেরত না দিলে মেয়েটির বাবার সঙ্গে দুই অভিযুক্তর উত্তপ্ত বাদানুবাদ হয়। এরপই দুই অভিযুক্ত মেয়েটিকে খুন করে তার বাবাকে সবক শেখানোর ছক কষে। জানা গিয়েছে, পাঁচ হাজার টাকা বকেয়া ছিল।
সিনিয়র পুলিশ সুপার আকাশ কুলহারি জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তে ধর্ষণের কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি। শ্বাসরোধ করে মেয়েটিকে খুন করা হয়েছিল বলে রিপোর্ট জানানো হয়েছে।

কুলহারি বলেছেন, অপরাধের ভয়াবহতার পরিপ্রেক্ষিতে দুই ধৃতকে কঠোর ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট (এনএসএ)-র আওতায় অভিযুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। ফাস্ট ট্রাক আদালতে মামলাটি নিয়ে আসার প্রক্রিয়ায়ও শুরু হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
মৃতের বাবা ধৃতদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। পরিবারের অন্যান্যদের অজ্ঞাতে এই অপরাধ করা যেত না। এই ঘটনায় অন্যান্যদের গ্রেফতার করা না হলে তিনি আমরণ অনশন শুরু করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
এই ঘটনা ঘিরে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার তাপ্পাল টাউনশিপে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটোসাঁটো করা হয়।

এদিকে, এই ঘটনায় কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে এসএইচও সহ পাঁচ পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। মেয়েটি নিখোঁজ হওয়ার পর মামলা দায়েরে বিলম্ব এবং তদন্তে বিলম্বের অভিযোগে ওই পাঁচ পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে আধিকারিকরা জানিয়েছেন।
তাপ্পাল থানায় মেয়েটি নিখোঁজ হওয়ার একদিন পর গত ৩১ মে মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
পুলিশ কর্মীদের সাসপেনশন সম্পর্কে কুলহারি বলেছেন, সার্কেল অফিসার পঙ্কজ শ্রীবাস্তবের অনুসন্ধানের পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবার নেওয়া হয়েছে।