কলকাতা: পুলওয়ামা সন্ত্রাসের বদলা নিল ভারত। আজ শেষরাতে বালাকোট, চাখোটি ও মুজফফরাবাদের জৈশ ই মহম্মদ ঘাঁটিগুলিতে ১০০০ কেজির ওপর বোমা বর্ষণ করেছে ভারতীয় বায়ুসেনা। মাটিতে মিশে গিয়েছে ঘাঁটিগুলি, খতম অন্তত ৩০০ জঙ্গি। কিন্তু কীভাবে কাজ করে এই মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমান, যা বায়ুসেনার অন্যতম ভয়ঙ্কর সমরাস্ত্র? চলুন দেখা যাক।
মিরাজ ২০০০ তৈরি করেছে ফ্রান্সের ড্যাসল্ট অ্যাভিয়েশন, ১৯৮৪ থেকে এই মিরাজ ফরাসি বায়ুসেনার অংশ। এই কমব্যাট যুদ্ধবিমান একাধিক নির্দেশ পালনে সক্ষম। শুধু ভারত নয়, মিশর, গ্রিস, পেরু, কাতার, তাইওয়ান ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির প্রতিরক্ষা বাহিনীও এই বিমান ব্যবহার করে।
সিঙ্গল সিটার ও টু সিটার মিরাজ ২০০০ ফরাসি বায়ুসেনায় প্রথম অন্তর্ভুক্ত হয় ১৯৮৪-তে। এরপর তার আধুনিকীকরণ হয়, নতুন বিমানের নাম মিরাজ ২০০০এন ও মিরাজ ২০০০ডি। প্রথমটি টু সিটার, কম উচ্চতায়, যে কোনও আবহাওয়ায় পরমাণু হামলা করতে সক্ষম, ওড়ে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে। অন্যটি আরও আধুনিক, স্বয়ংক্রিয়ভাবে বোমা ফেলতে সক্ষম।
ভারত ব্যবহার করে মিরাজ ২০০০-এর আধুনিকতম সংস্করণটি। এর ককপিটে রয়েছে হ্যান্ডস অন থ্রটল অ্যান্ড স্টিক বা এইচওটিএএস কন্ট্রোল। এছাড়া রয়েছে থালেস ভিইএইচ ৩০২০ হেড আপ ডিসপ্লেও ৫টি ক্যাথোড রে টিউব মাল্টিফাংশন অ্যাডভান্সড পাইলট সিস্টেমস ইন্টারফেস বা এপিএসআই ডিসপ্লে।
মিরাজ ২০০০-এর বৈশিষ্ট্য হল, তা শত্রুপক্ষের নজর না কেড়েই নীচু দিয়ে উড়তে পারে, আজকের অপারেশনেও তাই এই বিমানটি ব্যবহার করেছে বায়ুসেনা। অস্ত্রবহনের জন্য এতে রয়েছে ৯টি হার্ডপয়েন্ট, ৫টি ফিউজলেজে ও প্রতিটি ডানায় ২টি করে। সিঙ্গল সিটারটির ভেতরে বসানো অত্যন্ত দ্রুতগতিতে গুলিবর্ষণে সক্ষম দুটি ৩০ মিলিমিটার বন্দুক। এছাড়া এতে রয়েছে অত্যাধুনিক ডিজিটাল উইপন ডেলিভারি ও নেভিগেশন সিস্টেম ওরফে ডাব্লিউডিএনএস। লেসার নিয়ন্ত্রিত অস্ত্রও যে কোনও সময় নিক্ষেপ করা যায় এই বিমান থেকে।
১৯৯৯-এ কার্গিল সংঘর্ষে আইএএফ প্রথম ব্যবহার করে মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমান। তা শত্রুপক্ষের মধ্যে বিস্ময় জাগিয়েছিল। মিগ ২১ ও মিগ ২৭-এর একের পর এক হানা ও রকেট ছোঁড়ার পরেও পাক সেনার প্রতিরক্ষা ভাঙা না পড়ায় ভারত মিরাজ হানা শুরু করে। ২০১৬-র সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের সময়েও মিরাজ ২০০০ ব্যবহার করা হয়। লেসার নিয়ন্ত্রিত বোমা নষ্ট করে দেয় শত্রুপক্ষের সাপ্লাই লাইন।