বারাণসী: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নামে ট্রাস্ট তৈরি করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল তৈরির জন্য অনুদান চাওয়ার অভিযোগে ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করল পুলিশ। বারাণসী ক্যান্টনমেন্ট থানার আধিকারিক রাকেশ কুমার জানিয়েছেন, ‘প্রধান অভিযুক্ত অজয় পাণ্ডেকে জেরা করার জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নামে ট্রাস্ট তৈরি করে প্রতারণা ও জালিয়াতি করার অভিযোগ রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগের তদন্ত চলছে।’

পুলিশ সূত্রে খবর, বারাণসীর কবীর নগর অঞ্চলের বাসিন্দা অজয় এ বছরের ১৪ জুলাই ‘আদর্শ নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদি জনকল্যাণকারী ট্রাস্ট’ নথিভুক্ত করেন। তিনি নিজেকে এই ট্রাস্টের চিফ ম্যানেজার, ট্রাস্টি ও প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে পরিচয় দেন। আরও কয়েকজন ব্যক্তিকে এই ট্রাস্টের সদস্য হিসেবে পরিচয় দেন অজয়। সেই ব্যক্তিরা হলেন বারাণসীর বাসিন্দা প্রদীপ কুমার সিংহ, সোনু কুমার গুপ্ত, বিকাশ মিশ্র, প্রিয়া শ্রীবাস্তব, অনিল, রঞ্জিতা সিংহ, শাহবাজ খান এবং বালিয়ার বাসিন্দা অবিনাশ সিংহ ও রবীন্দ্রনাথ পাণ্ডে।

এই ট্রাস্টের নামে একটি লেটারপ্যাড ছাপান অজয়। লেটারহেডে প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহার করা হয়। ২৪ জুলাই ও ৩১ জুলাই ট্রাস্টের পক্ষ থেকে বারাণসীর জেলাশাসক কৌশল রাজ শর্মাকে চিঠি দিয়ে ‘আদর্শ নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়’-এর জন্য ১৯০ বিঘা জমি দিতে বলা হয়। ট্রাস্টি হিসেবে সেই চিঠিতে সই করেন অজয়। তিনি ২৯ অক্টোবর বারাণসীর জেলাশাসককে আরও একটি চিঠি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি দেওয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির কাজে সাহায্য করার অনুরোধ জানান। ট্রাস্টের অধীনে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির জন্য অনুদান চেয়ে কয়েকজন বিধায়ক ও সাংসদকেও চিঠি দেন অজয়।

এই চিঠি পেয়ে বারাণসীর জেলাশাসকের সন্দেহ হওয়ায় তিনি এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন। সাব-রেজিস্ট্রার-২ (সদর) হরিশ চতুর্বেদী তদন্ত শুরু করেন। তদন্তে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রীর নাম ব্যবহার করে প্রতারণা করছেন অজয়। জেলাশাসককে বিষয়টি জানান হরিশ। এরপরেই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করার নির্দেশ দেন জেলাশাসক।

বারাণসী ক্যান্টনমেন্ট থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর অজয়দের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০ ধারায় প্রতারণা, ৪৬৭ ধারায় নথি জাল করা, ৪৬৮ ধারায় প্রতারণার উদ্দেশ্যে নথি জাল করা এবং ৪৭১ ধারায় জাল নথিকে আসল বলে দাবি করার জন্য মামলা করা হয়েছে।