গতকাল ইয়েদুরাপ্পার যে ভিডিও প্রকাশ্যে আসে সেটিতে দেখা যায়, হুবলিতে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলছেন, ‘কর্ণাটক বিধানসভার তৎকালীন স্পিকার কংগ্রেস-জেডিএস-এর বিদ্রোহী বিধায়দের পদ খারিজ করলেও, সুপ্রিম কোর্টে স্বস্তি পাবেন। সুপ্রিম কোর্টে নতুন প্রমাণ পেশ করবে বিজেপি।’
আজ এক সাংবাদিক বৈঠকে এ বিষয়ে বিজেপি-কে তীব্র আক্রমণ করে কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক কে সি বেনুগোপাল বলেছেন, ‘কংগ্রেস-জেডিএস বিধায়কদের ভাঙিয়ে নেওয়ার বিষয়ে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পার সাম্প্রতিক ভিডিও ক্লিপিংয়ের কথা সবাই জানেন। কংগ্রেস দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছে, বিরোধী দলগুলির বিধায়কদের ভাঙিয়ে আনা এবং বিরোধী দলগুলি পরিচালিত সরকারে অন্তর্ঘাতের জন্য সিবিআই, ইডি, আয়কর দফতরের মতো সরকারি সংস্থাগুলির অপব্যবহার করছে বিজেপি। কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রীর এই ভিডিও ক্লিপে বিষয়টি নিয়ে আর কোনও সন্দেহ থাকল না। বিধায়ক ভাঙানোর পিছনে ছিলেন শাহ। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, ইয়েদুরাপ্পা বলছেন, মুম্বইয়ে বিদ্রোহী বিধায়কদের থাকার ব্যবস্থা করছেন শাহ। বিদ্রোহী বিধায়করা সুপ্রিম কোর্টে স্বস্তি পেয়ে নির্বাচনে প্রার্থীও হতে পারেন। ইয়েদুরাপ্পার এই মন্তব্য দুর্ভাগ্যজনক। ৪ নভেম্বর এ বিষয়ে রায় দেবে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু তার আগেই মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, বিদ্রোহী বিধায়কদের পক্ষেই রায় দেবে আদালত। সুপ্রিম কোর্টেরও অপব্যবহার করছে বিজেপি। আশা করি সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।’
২০১৮-র ১২ মে কর্নাটকে বিধানসভা নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও, নিরঙ্কুশ জয় পায়নি বিজেপি। প্রথমে একক বৃহত্তম দল হিসাবে বিজেপি সরকার তৈরি করে। মুখ্যমন্ত্রী হন ইয়েদুরাপ্পা। কিন্তু, সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে না পারায় বিজেপি সরকারের পতন হয়। জোট বেঁধে কর্ণাটকে সরকার তৈরি করে কংগ্রেস-জেডিএস। কিন্তু, এ বছরের শুরুতে হঠাৎই কংগ্রেস-জেডিএসের কয়েকজন বিধায়ক বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। তাঁরা মুম্বইয়ের হোটেলে গিয়ে থাকতে শুরু করেন। এরপর ১৭ জন বিদ্রোহী বিধায়ক পদত্যাগ করেন। কংগ্রেস-জেডিএস জোট সরকার পড়ে যায়। বিদ্রোহী বিধায়কদের সৌজন্যে সরকার তৈরি করে বিজেপি। বিরোধীরা অভিযোগ করে, বিধায়কদের ভাঙিয়ে অগণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা দখল করল বিজেপি। এবার ইয়েদুরাপ্পার ভিডিও প্রকাশ্যে আসায় সেই অভিযোগ জোরাল হল।