কলকাতা:  বাঁকুড়ায় কার মূর্তিতে ফুল দিলেন অমিত শাহ? মূর্তি কার? সাঁওতাল বিদ্রোহের মুখ বিরসার মুণ্ডা না অন্য কারও? মূর্তি-বিতর্ক নিয়েই এবার সরগরম বঙ্গ রাজনীতির আঙিনা। আদিবাসী সম্প্রদায়ের একাংশের দাবি, মূর্তিটি আদতে বিরসা মুণ্ডার নয়। এই অভিযোগ মাটিতে পড়তে দেয়নি তৃণমূল। এক কদম এগিয়ে তারা আবার শুক্রবার সেই  মূর্তি দুধ দিয়ে শুদ্ধকরণও করে ফেলে।

বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার পুয়াবাগানে আদিবাসী প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে সফর শুরু করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। প্রতিকৃতিটি স্বাধীনতা সংগ্রামী বিরসা মুণ্ডার বলে প্রথম থেকেই প্রচার করছিল বিজেপি। কিন্তু, স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের একাংশের দাবি, মূর্তিটি আদতে বিরসা মুণ্ডার নয়, একজন আদিবাসীর শিকারীর! একই সুরে সুর মেলায় তৃণমূল। তারা বলে, বিরসা মুণ্ডাকে অপমান করেছে বিজেপি।  শুক্রবার তৃণমূল ভবন থেকে রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, বিরসাকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন নাকি শিকারী ধরতে। বিরসা মুণ্ডাকে অবমাননা করা হয়েছে’

মূর্তিটি বিরসা মুণ্ডার নয় বলে মেনে নেয় জেলা বিজেপি নেতৃত্বও। তাদের দাবি, মূর্তির তলায় ছিল বিরসা মুণ্ডার ছবি। তাতেই ফুল দেন অমিত শাহ। যদিও বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ উল্টোটাই দাবি করছেন। এই ব্যাপারে অবশ্য বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের দাবি, তিনি ছোট থেকেই দেখছেন, মূর্তিটি বিরসা মুণ্ডার।
১৮৭৫ সালে ১৫ নভেম্বর । রাঁচিতে জন্মগ্রহণ করেন বিরসা মুণ্ডা। ব্রিটিশ শাসকদের অত্যাচার বিরুদ্ধে তিনি আদিবাসী মুণ্ডাদের সংগঠিত করে মুন্ডা বিদ্রোহের সূচনা করেছিলেন। বিদ্রোহীদের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন 'বিরসা ভগবান' নামে পরিচিত ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে ১৮৯৯-১৯০০ সালে 'মুণ্ডা বিদ্রোহ' সংগঠিত হয়। এই বিদ্রোহের মূল লক্ষ্য ছিল মুণ্ডারাজ ও স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা। এই বিদ্রোহের পরে বিরসা ও তাঁর শতাধিক সঙ্গী গ্রেফতার হন। বিচারে বিরসা সহ আরও দুজনের ফাঁসির হুকুম হয়। ফাঁসির ঠিক আগের দিন ১৯০০ সালের ৯ ই জুন রাঁচি জেলে তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২৫ বছর।