নয়াদিল্লি: সুপ্রিম কোর্টে রথযাত্রা নিয়ে বিজেপির আবেদন খারিজ। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির রথযাত্রা কর্মসূচির অনুমতি না দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায় চ্যালেঞ্জ করে বিজেপি শীর্ষ আদালতে স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল করে জরুরি ভিত্তিতে দ্রুত শুনানির আবেদন করেছিল। কিন্তু শীর্ষ আদালতে তাতে সম্মতি দেয়নি। বিজেপির আইনজীবী জানিয়েছেন, স্বাভাবিক যে প্রক্রিয়ায় শুনানির জন্য আবেদন নথিভুক্ত করা হয়, এ ক্ষেত্রেও তাই করা হবে বলে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রির তরফে তাঁদের জানানো হয়েছে। শীতের ছুটিতে সুপ্রিম কোর্ট বন্ধ থাকছে। ফলে রাজ্যে রথযাত্রা কর্মসূচি ইস্যুতে দ্রুত সুবিচার পাওয়ার আশা নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের দরজায় কড়া নাড়লেও কাঙ্খিত সাফল্য পেল না বিজেপি।
গত শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এক বিচারপতির বেঞ্চের রথযাত্রা কর্মসূচিতে সম্মতি দিয়ে আগের ঘোষিত রায় খারিজ করে দেয়। তার বিরুদ্ধে পাল্টা সুপ্রিম কোর্টে বিজেপি আবেদন করে, ‘গণতন্ত্র বাঁচানো’র লক্ষ্যে তাদের কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেওয়া হোক। বিজেপি তাদের এই কর্মসূচি ২০১৯ এর লোকসভা ভোটের আগে রাজ্যের ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রেই পালনে শীর্ষ আদালতের সবুজ সংকেত চাইছে।


রথযাত্রার অনুমতি দাবি করে সোমবার সুপ্রিম কোর্টে গেল বিজেপি। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায় চ্যালেঞ্জ করেছে তারা। কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের রায় রথযাত্রায় অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চ তা খারিজ করে দেয়। তার বিরোধিতা করেই সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হল পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি। জরুরি ভিত্তিতে তারা স্পেশাল লিভ পিটিশনের দ্রুত শুনানি চেয়েছে।
হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের বিরুদ্ধে বিজেপির তরফে আবেদন পাওয়ার কথা জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রির জনৈক অফিসার। বিজেপির আবেদন খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
চলতি মাসে ইতিমধ্যেই রাজ্যের কয়েকটি জায়গা থেকে বিজেপির রথযাত্রা কর্মসূচি শুরু হয়ে যাওয়ার কথা ছিল, যাতে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ থাকবেন বলেও ঠিক ছিল। কিন্তু রাজ্য সরকার সাম্প্রদায়িক শান্তি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কার উল্লেখ করে তাতে সম্মতি দিতে অস্বীকার করে। পাল্টা কলকাতা হাইকোর্টে যায় বিজেপি। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর বেঞ্চ বিজেপির আবেদনের প্রেক্ষিতে বিজেপি ও রাজ্য সরকারকে বেশ কিছু শর্ত দিয়ে রথযাত্রায় অনুমতি দেয়। বেঞ্চ বলে, প্রশাসন তার নিজস্ব ক্ষমতা ‘অযৌক্তিক ভাবে, নিজের মর্জিমাফিক’ কাজে লাগালে আদালত ‘হস্তক্ষেপ করতে পারে’। এর বিরোধিতা করে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। প্রধান বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত ও বিচারপতি শম্পা সরকারের বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চের রায় খারিজ করে দেয়, পাশাপাশি বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর বেঞ্চকে নতুন করে বিষয়টির শুনানি করতে বলে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে রাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থাগুলির যাবতীয় ইনপুট বিবেচনা করতেও নির্দেশ দেয়। প্রসঙ্গত, ৭ ডিসেম্বর থেকে রথযাত্রা শুরু করবে বলে ঘোষণা করেছিল বিজেপি। ৬ ডিসেম্বর কলকাতা হাইকোর্টের এক বিচারপতির বেঞ্চ তাতে অনুমতি দেয়নি। বিজেপি ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হলে তারা রাজ্যের মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও ডিজিপিকে বিজেপির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাতে বলে। ১৫ ডিসেম্বর অনুমতি দিতে অস্বীকার করে রাজ্য প্রশাসন। গত সপ্তাহে ফের তাকে হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করে বিজেপি।