নয়াদিল্লি: গণপিটুনিতে মৃত্যুর বিরোধিতা, নিন্দায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে খোলা চিঠি দেওয়ায় ৪৯ জন নামীদামী ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে সম্প্রতি এফআইআর দায়ের হওয়ার প্রতিবাদে তাঁদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে দেশবাসীকে প্রকাশ্যে চিঠি লিখে একদল বিদ্বজন জানালেন, আরও অনেকে এবার প্রতিদিন মুখ খুলবেন। বলা হয়েছে, সাংস্কৃতিক দুনিয়ায় আমাদের ৪৯ সহকর্মীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে, স্রেফ তাঁরা নাগরিক সমাজের সম্মাননীয় সদস্য হিসাবে নিজেদের দায়িত্ব পালন করেছেন বলে। তাঁরা দেশে মারধর করে হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীকে খোলা চিঠি লিখেছিলেন। ইন্ডিয়ান কালচারাল ফোরাম নামে সংগঠনের তরফে খোলা চিঠিতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখাকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা বলা যায়, না কি আদালতের অপব্যবহার করে হয়রানি, হেনস্থা করাটা নাগরিকদের কন্ঠস্বর দমনের কৌশল। আমরা সকলে ভারতীয় সাংস্কৃতিক দুনিয়ার সদস্য ও বিবেকবান নাগরিক হিসাবে এহেন হেনস্থার নিন্দা করছি। আমাদের সহকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে যা যা বলেছেন, তার প্রতিটি শব্দ সমর্থন করি আমরা। সেজন্যই ওঁদের চিঠিটা ফের শেয়ার করছি, সাংস্কৃতিক, আইনি ও শিক্ষামহলকেও তা করার আবেদন করছি। এজন্যই আমাদের আরও অনেকে রোজ সরব হবেন গণপিটুনি, মানুষের কন্ঠস্বর দমন, আদালতের অপব্যবহার করে নাগরিকদের হেনস্থার বিরুদ্ধে। চিঠিতে সই করেছেন নাসিরুদ্দিন শাহ, রোমিলা থাপার সহ ১৮৫ জন বু্দ্ধিজীবী।
প্রসঙ্গত, গত ৩ অক্টোবর বিহারের মুজফফরপুরে অপর্ণা সেন, আদুর গোপালকৃষ্ণণ, রামচন্দ্র গুহ সমেত ৪৯ বুদ্ধিজীবীর বিরুদ্ধে গণপিটুনির নিন্দা করে, উদ্বেগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ায় রাষ্ট্রদ্রোহিতার দায়ে ওই এফআইআর দায়ের হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির নানা ধারায় অভিযুক্ত হয়েছেন তাঁরা। সুধীর কুমার ওঝা নামে স্থানীয় আইনজীবীর পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে মুজফফরপুরের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট সুর্যকান্ত তেওয়ারি আদেশ দেন এজন্য। বুদ্ধিজীবীদের চিঠিতে বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রবণতা সমর্থন করা হয়েছে বলে দাবি ওঝার।
প্রসঙ্গত, সেই চিঠিতে মুসলিম, দলিত ও অন্য সংখ্যালঘুদের পিটিয়ে খুন অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানিয়ে বলা হয়েছিল, ‘বিরুদ্ধ মতপ্রকাশের অধিকার ছাড়া কোনও গণতন্ত্রই হয় না’। ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান ‘আগ্রাসী, প্ররোচনামূলক হুঙ্কারে’ পর্যবসিত হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছিলেন ৪৯ বুদ্ধিজীবী।