গুয়াহাটি: ২৫-এ ২২, উত্তরপূর্ব ভারতে এটাই বিজেপির টার্গেট। অসম, নাগাল্যান্ড, মেঘালয়, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশ, ত্রিপুরা-এই ৬ রাজ্যের ২৫টি লোকসভা আসনের মধ্যে ২২টি আসন নিজেদের দখল করতে মরিয়া ভারতীয় জনতা পার্টি। আর সেকারণেই মতভেদ মিটিয়ে শরিকদের মানভঞ্জনে নেমে পড়েছে গেরুয়া শিবির। বিজেপি সূত্রের খবর অসমে অসম গণ পরিষদ ও বড়োল্যান্ড পিপলস ফ্রন্ট, ত্রিপুরায় আইপিএফটি, মেঘালয়ের ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, নাগাল্যান্ডের ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্র্যাটিক প্রোগ্রেসিভ পার্টি ও সিকিম ক্রান্তিকারি মোর্চার সঙ্গে জোট বাঁধতে তত্পর হয়েছে তারা। আর সেই কাজে বুধবারই সাফল্য পেয়ে গেলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক রাম মাধব।
অসমে ফের পুরনো শরিককে পাশে পেল ভারতীয় জনতা পার্টি। নাগরিক বিল নিয়ে মাস দুয়েক আগেই দুই শরিকের মধ্যে যে বিবাদ দেখা দিয়েছিল, লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হতেই তা মিটে গেল। দুই দলের শীর্ষনেতারা বিবাদ মিটিয়ে ফের জোট বাঁধলেন। বুধবারই ট্যুইট করে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সম্পাদক রাম মাধব জানিয়ে দিলেন, আগামী লোকসভা নির্বাচনে অসমে কংগ্রেসকে হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েই লড়বে অগপ ও বিজেপি। ট্যুইটে রাম মাধব লিখেছেন, “আলোচনার পর বিজেপি ও অগপ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে হারাতে দুই দলই একসঙ্গে কাজ করবে এবং লড়বে।”
একই সঙ্গে রাম মাধব আরও জানিয়েছেন, বিজেপি ও অগপ ছাড়াও এই জোটের তৃতীয় শরিক হতে চলেছে বড়োল্যান্ড পিপলস ফ্রন্ট (বিপিএফ)। অগপ-র তরফে অতুল বোরা ও কেশব মহন্ত এবং বিজেপির পক্ষ থেকে হিমন্ত বিশ্ব শর্মার উপস্থিতিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। যদিও নাগরিক বিল নিয়ে নিজেদের পূর্বতন অবস্থান নিয়ে কোনও কথাই বলতে চাননি অগপ-র সভাপতি অতুল বোরা। কেন্দ্র গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সংখ্যালঘুদের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদানের যে বিল লোকসভায় পাশ করিয়েছে, তার বিরোধিতা করেছিল অগপ। শুধু তা-ই নয়, কেন্দ্রের বিলের বিরোধিতা করে বিজেপির সঙ্গও ছেড়েছিল তারা।
অসম গণ পরিষদের এক বিধায়কের মতে, বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ নিয়ে দলের মধ্যেই মতানৈক্য তৈরি হয়েছে। এমনকি নিচুতলার কর্মীদের উপর এর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে বলেও আশঙ্কিত ছিলেন নেতৃত্ব। সেকারণেই অবস্থান বদলে ফের জোটে ফিরছে তারা। ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে অসম থেকেই ৭টি আসন জিতেছিল বিজেপি। ৩টি করে আসন পেয়েছিল কংগ্রেস ও সর্বভারতীয় ঐক্যবদ্ধ গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এআইইউডিএফ)। একটি আসন ছিল নির্দল প্রার্থীর দখলে। লোকসভায় একটি আসনও পায়নি অসম গণ পরিষদ।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে বিজেপি, অগপ ও বিপিএফ জোটবদ্ধ হয়ে লড়ে অসম বিধানসভার দখল নেয়। ২০০১ থেকে পরপর তিনবার অসমে এই জোটই ক্ষমতায় রয়েছে। আবার গত বছর ডিসেম্বরেই পঞ্চায়েত ভোটে স্বতন্ত্রভাবে লড়েছিল দুই শরিক। প্রসঙ্গত, অসমে ভোট হবে তিন দফায়। ১১, ১৮ ও ২৩ এপ্রিল অসমে লোকসভা ভোট অনুষ্ঠিত হবে বলেই জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।