গুয়াহাটি: অসমে নির্বাচনে জিতেও টানাপোড়েন জারি বিজেপিতে। মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, হিমন্ত বিশ্ব শর্মা না সর্বানন্দ সোনোয়াল, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারল না পদ্ম শিবির। ফলে ক্রমশই পিছিয়ে যাচ্ছে সরকার গড়ার প্রক্রিয়া।


কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএর বিরুদ্ধে জয় পেয়েও সহজ হচ্ছে না সরকার গঠন। নিজেদের দ্বন্দ্বেই বিদ্ধ গেরুয়া শিবির। পরিস্থিতি এমন জায়গায় এসে পৌঁছেছে যে, অসমে মুখ্যমন্ত্রীর শপথগ্রহণের দিন ঠিক করতে পারছে না জয়ী দল। মঙ্গলবার থেকেই সোনোয়াল ও হিমন্তের সঙ্গে দফায় দফায় দেখা করছেন জয়ী বিধায়করা।
 
এ প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির এক শীর্ষ নেতা অবশ্য দাবি করেছেন, বাংলার হিংসার জন্যই অসমে সরকার গড়তে দেরি হচ্ছে বিজেপির। তাঁর কথায়, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা ছাড়াও কেন্দ্রীয় নেতারা এখন পশ্চিমবঙ্গের হিংসা নিয়ে চিন্তিত। শীঘ্রই গুয়াহাটিতে আসবেন তাঁরা। এরপরই বিজেপির বিধানসভার নেতা স্থির হবে। তিনিই পরবর্তীকালে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হবেন।


যদিও গেরুয়া ব্রিগেডের অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে অন্য কথা। সাধারণত ক্ষমতাসীন রাজ্যে নির্বাচনে গেলে মুখ্যমন্ত্রীকেই নিজেদের মুখ বলে প্রোজেক্ট করে বিজেপি। কিন্ত অসমে সেই পথে হাঁটেনি পদ্ম শিবির। অসমে গেরুয়া ব্রিগেডের জয়ের পরও একই কথা শোনা যায় রাজ্য বিজেপির পর্যবেক্ষক জয় পান্ডার মুখে। বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী কে হচ্ছেন জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ''আমাদের পার্লামেন্টারি বোর্ড এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।'' 


রাজ্য রাজনীতির কুশীলবরা বলছেন, অসমে সর্বানন্দ সোনোয়ালের ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি স্বচ্ছ হলেও, এবার মুখ্যমন্ত্রী পদে অনেকটাই এগিয়ে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। একদা কংগ্রেসের এই মুখ এখন উত্তরপূর্বে বিজেপির কাছের মানুষ। অতীতে তরুণ গগৈ সরকারেও হাইপ্রোফাইল পোর্টফোলিও সামলেছেন তিনি।
 
রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি সামলাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেন হিমন্ত। অর্থমন্ত্রী রূপেও রাজ্যে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেন তিনি। বিগত তিন বছরে মোদি-শাহের নেক নজরে চলে এসেছেন এই প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা। তবে শুধু অসমে নয়, উত্তরপূর্বেও গেরুয়া ঝড় তোলায় বড় অবদান রয়েছে এই নেতার। 


অসম বিধানসভার সূত্র বলছে, আগামী ৩১ মে পর্যন্ত রয়েছে ১৪-তম অসম বিধানসভার মেয়াদ। তার মধ্যেই পূর্ণ করতে হবে সরকার গড়ার প্রক্রিয়া। ১২৬টি বিধানসভা আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছে ৬০টি আসন। মিত্র জোট অসম গণ পরিষদ ও বোরো পিপলস ফ্রন্ট মিলে যথাক্রমে ৯ ও ৬টা আসন এসেছে এনডিএ-র ভাণ্ডারে। ম্যাজিক ফিগার ৬৪ থেকে অনেকটাই এগিয়ে গেরুয়া ব্রিগেড। এখন শুধু সরকার গড়ার পালা।