বেঙ্গালুরু: এবার বেঙ্গালুরুর কোভিড বেড দুর্নীতিতে লাগল সাম্প্রদায়িক রং। কংগ্রেসের অভিযোগ, বেড স্ক্যামে একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের নাম জড়িয়েছে বিজেপি। রাজ্যের বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিতে যা কখনোই উচিত নয়। 


সম্প্রতি বেঙ্গালুরুর হাসপাতালে কোভিড বেড নিয়ে দুর্নীতির ঘটনা সামনে আসে। অভিযোগ, কিছু অসাধু চক্র বেশি টাকার বিনিময়ে হাসপাতালে বেড পাইয়ে দিচ্ছিল রোগীদের। কোভিড বেড নিয়ে এই কালোবাজারি নজরে আসে পুলিশের। গ্রেফতার করা হয় অসাধু চক্রের সঙ্গে যুক্ত বেশ কয়েকজনকে।


বেঙ্গালুরু বেড কেলেঙ্কারির বিষয়টি সামনে আনেন বিজেপি সাংসদ তেজস্বী সূর্য। তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন ধরেই দেখছি, শহরের কোভিড হাসপাতালে সব বেড ভর্তি। অনলাইন পোর্টাল ঘাঁটলেই সেই ছবি দেখা যাচ্ছে।যদিও এরই মধ্যে হাসপাতাল থেকে বহু রোগীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিছু রোগী মারা গিয়েছেন। তারপরেও একই হিসেব দেখাচ্ছে কোভিডের অনলাইন পোর্টাল। বহু ক্ষেত্রে উপসর্গহীন রোগীদের নামে বেড ব্লক করা হচ্ছে। তারা হোম আইসোলেশনে রয়েছেন, অথচ তাদের নামে বেড বুক করছে অসাধু চক্র।’


এই বলেই থেমে থাকেননি বেঙ্গালুরু দক্ষিণের সাংসদ। তাঁর দাবি, বাইরে থেকে কিছু দালাল কোভিড ওয়ার রুমের সঙ্গে জোট করে এই অসাধু চক্র চালাচ্ছে। ৪,০৬৫টা বেড ভুয়ো নামে ব্লক করা হয়েছে। পরে সেখানে নতুন রোগীদের বেশি টাকা দিয়ে ভর্তি করা হচ্ছে। এই দুর্নীতি চক্রের পর্দা ফাঁস করে একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের ১৬ জনের নাম উল্লেখ করেন বিজেপি যুব মোর্চা প্রেসিডেন্ট। তাঁর প্রশ্ন, ‘কেন শহরের কোভিড রোগীদের ভবিষ্যৎ এই কোভিড ওয়ার রুমের ১৬ জনের হাতে থাকবে?’


বিজেপি সাংসদের এই বক্তব্য প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন বেঙ্গালুরুর এক পুর আধিকারিক। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে তিনি জানান, কোভিড ওয়ার রুমে ২০০ জন কাজ করছেন। যাদের মধ্যে কেবল ১৬ জনের নাম নিয়েছেন সাংসদ। তেজস্বীর এই মন্তব্য নিয়ে পাল্টা আসরে নেমেছে কংগ্রেস। সূর্যের বিরুদ্ধে একাধিক ট্যুইট করেছেন কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারমাইয়া। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘কোভিড বেড দুর্নীতিতে একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের নাম উল্লেখ করে বিষয়টিতে সাম্প্রদায়িক রঙ লাগানো হচ্ছে। বিষয়টি খুবই দুর্ভাগ্যজনক ও অসংবেদনশীল। মানুষ যখন খাবার ও মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে, তখন একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে নিশানা করে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে বিজেপি। ১০ দিন আগেও এই খবরটা উনি জানতেন। তাহলে কীসের জন্য এই সময়টা নিচ্ছিলেন বিজেপি নেতা? এর মধ্যে কি বিবিএমপি আধিকারিকদের সঙ্গে দরাদরি করছিলেন তিনি?’


এদিকে, দুই দলের রাজনৈতিক তরজার মাঝেই মুখ খুলেছেন বৃহৎ বেঙ্গালুরু মহানগরপালিকার (বিবিএমপি) যুগ্ম কমিশনার সরফরাজ খান। সোশ্যাল মিডিয়ায় এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত পোস্ট করেছেন তিনি। সরফরাজের দাবি, বিবিএমপি-র কোভিড কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে জড়িত নন তিনি। কোভিড কেয়ার সেন্টার ও 'সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট'-এর দায়িত্ব রয়েছে তাঁর উপর। যেভাবে বিষয়টিতে তাঁর নাম জড়িয়ে সাম্প্রদায়িক রঙ লাগানো হয়েছে তা দেখে অবাক হয়েছেন তিনি।