কোটা: হস্টেল থেকে বাড়ি ফিরে গেছে অন্যান্য রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা। বিশাল  হস্টেলে কোথাও ২ জন, কোথাও ৪ জন। কারও আবার দিন কাটছে পেয়িং গেস্ট হিসেবে থাকা বাড়িতে। চারবেলা খাবার দাবারও অমিল। কবে কীভাবে ফেরা যাবে বাড়ি সেই চিন্তায় রাতের ঘুম উড়ে গেছে রাজস্থানের  'কোচিং হাব' কোটায় জয়েন্ট এন্ট্রান্স মোডিক্যাল ও আইআইটি র প্রস্তুতি নিতে যাওয়া বাংলার ছাত্রছাত্রীদের। লকডাউন ঘোষণার পর থেকেই নিজের বাড়ি থেকে বহু দূরে আটকে আছে বাংলার প্রায় হাজার খানেক ছাত্রছাত্রী।  এদিকে প্রতিদিন খারাপ হচ্ছে রাজস্থানের কোটার করোনা পরিস্থিতি। ফলে শুধু জল-খাবার নয়, থাকার জায়গা নিয়েও নিরাপত্তার অভাবে ভুগছেন সেখানে থাকা বাংলার পড়ুয়ারা। কারও বাড়ি মালদায়, কারও বারাসাতে, কারও কলকাতায়। বাড়িতে ফেরার আকুতি নিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে এঁদের অনেকেই। ছাত্রী স্নিগ্ধা রায় এবিপি আনন্দ-র সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে জানালেন, ‘কোটা থেকে বেশিরভাগ স্টুডেন্ট বাড়ি চলে গেছে। সব হোস্টেলেই এখন বড়জোর ৫-৬ জন আছে। আমার হস্টেলে আমরা দুজন আছি। একজন বিহার থেকে আর আমি পশ্চিমবঙ্গ থেকে। খুব ভয় করছে। বাড়ি ফিরতে চাই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আমাদের আর্জি।’

মালদা থেকে কোটায় পড়তে আসা সোহিনীর দিন কাটছেও এমন আতঙ্কে। বাইরে থেকে খাবার এনে খাওয়াও বেশ অসুবিধার, জানালেন তিনি।


বাংলা থেকে পড়তে যাওয়া শাহিন মেহমুদের গলাতেও একইরকম চিন্তার সুর। হস্টেলে বাইরে থেকে কাজ করতে আসছেন কর্মীরা, প্রতিমুহূর্তে  সংক্রমিত হবার ভয়। পড়াশুনার চূড়ান্ত ক্ষতি হচ্ছে, জানালেন শাহিন। হস্টেলের ফি দিতে না পারায়, আরও বাড়ছে সমস্যা।


দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র সোমের কণ্ঠেও সেই উদ্বিগ্ন সুর। যে কোনও মুহূর্তেই সংক্রমিত হতে পারেন, আশঙ্কায় তিনিও।  অন্যদিকে হস্টেল-ফি না দিতে পারলে মাথার উপর ছাদটাও থাকবে তো, মনে শঙ্কার মেঘ অনেকের মনেই।


ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড থেকে ছাত্রছাত্রীদের ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাই নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি।  কিন্তু বাংলার পড়ুয়ারা এখনও আটকে সেখানে। বাড়িতে উদ্বিগ্ন তাঁদের অভিভাবকরাও। কোটায় আটকে থাকা বাংলার ছাত্রছাত্রীরা তাই এখন তাকিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে। সঙ্কটকালে তাঁদের ‘ভরসা’ তিনিই।