কলকাতা: আজ ভ্রাতৃদ্বিতীয়া। পুরাণ অনুসারে, আজকের দিনেই বোন যমুনার হাত থেকে ফোঁটা নিয়ে অমরত্ব লাভ করেছিলেন মৃত্যুর দেবতা যমরাজ৷ তখন থেকেই ভাইফোঁটার প্রচলনের শুরু৷ যদিও অন্য একটি মতে, দৈত্য নরকাসুরকে বধ করার পর শ্রীকৃষ্ণর কপালে ফোঁটা দিয়েছিলেন বোন সুভদ্রা৷ তখন থেকেই ভাইফোঁটার উৎপত্তি৷

পঞ্জিকা মতে, কার্তিক মাসের শুক্লা দ্বিতীয়ায় ভাইফোঁটার উৎসব হয়। এই বিশেষ দিনে চন্দনের ফোঁটা নিজের কনিষ্ঠা আঙুল দিয়ে ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দেন বোনেরা। মঙ্গলকামনায় বলেন সেই লাইনগুলি, 'ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা...'।

স্বাভাবিকভাবেই বোন বা দিদিরা তাঁদের ভাই বা দাদা-দের দীর্ঘায়ু কামনায় সেই পুরাকাল থেকেই কালীপুজোর পর ভাইফোঁটা অনুষ্ঠানে মেতে ওঠেন৷ উৎসবের মরসুমের এটাই শেষদিন। তাই বাঙালি চেটেপুটে উপভোগ করে নেয় উৎসবের শেষ আমেজটুকু।

ছড়া কাটার পাশাপাশি মাথায় ধান ও দুব্বো রেখে শঙ্খ বাজিয়ে, উলুধ্বনি দিয়ে ভাই বা দাদাদের দীর্ঘায়ু কামনা করেন বোন ও দিদিরা৷ সারা দেশেই এই উৎসব পালিত হয়৷ স্বাভাবিকভাবে এই বিশেষ দিনে ভাই,দাদা ও দিদি,বোন, সবাই পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হন৷

বিভিন্ন এলাকায় পৃথক নাম হলেও চন্দনের ফোঁটা পরিয়ে মিষ্টি মুখ করানোর রীতি সর্বত্রই একই৷ লক্ষ্য কেবল মঙ্গলকামনা আর আনন্দ, ভাইবোনের খুনসুটি, ঝগড়া পেরিয়ে একটা দিন শুধুই আনন্দের।

করোনা পরিস্থিতিতেও আজ সকাল থেকেই আয়োজন শুরু হয়েছে সব জায়গায়। সকাল থেকেই আয়োজনে ব্যস্ত বোনেরা৷ দোকানে দোকানে মিষ্টি কেনার লম্বা লাইন৷ কোনও কোনও দোকানে মিলছে ভাইফোঁটার জন্য তৈরি স্পেশাল মিষ্টি।  অনেকে আবার মিষ্টির প্লেটও সাজিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।