সঞ্চয়ন মিত্র ও ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা: করোনা কাঁটার মধ্যে এবার চিন্তা বাড়াচ্ছে বার্ড ফ্লু। পাঁচ রাজ্যে ধরা পড়েছে বার্ড ফ্লু-এর প্রকোপ। কেন্দ্রের দাবি, এখনও পর্যন্ত মানব দেহে ছড়ায়নি সংক্রমণ। সমস্ত জাতীয় উদ্যান এবং অভয়ারণ্যে সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।

ভারতে করোনায় এখনও অবধি দেড় লক্ষেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। নতুন স্ট্রেনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭১। করোনা কাঁটার মধ্যে এবার আতঙ্ক বাড়াল বার্ড ফ্লু। এ যেন গোদের ওপর বিষফোড়া!

মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, হরিয়ানা, হিমাচল প্রদেশ, কেরল, কর্ণাটক ও তামিলনাড়ুতে বার্ড ফ্লুর আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করছে কেন্দ্র।। উদ্বেগ বাড়িয়ে কেরলের কোট্টায়মে ১০ হাজার হাঁসের বাচ্চা মারা গেছে। মধ্যপ্রদেশের ১০টি জেলায় ৫০০-র উপর কাকের মৃত্যু হয়েছে। হিমাচলের কাংড়ায় মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৭০০টি পরিযায়ী পাখির। এই পরিস্থিতিতে কেরল থেকে পোলট্রিজাত সামগ্রী আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মধ্যপ্রদেশ সরকার।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বার্ড ফ্লু বা অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা পাখিদের এক ধরনের জ্বর। যার জন্য দায়ী এইচ৫এন১ ভাইরাস।বার্ড ফ্লু রোগে আক্রান্ত হাঁস-মুরগির মাংস ও ডিম থেকে মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে এই ভাইরাস। এইচ৫এন১ ভাইরাস আক্রান্ত পরিযায়ী পাখিদের মাধ্যমে এই রোগ খুব দ্রুত এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। করোনা আবহে বার্ড ফ্লু নিয়ে অত্যন্ত সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রুখতে সমস্ত জাতীয় উদ্যান এবং অভয়ারণ্যে সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় মৎস্য এবং প্রাণী কল্যাণ দফতর। দিল্লিতে বিশেষ কন্ট্রোল রুম চালু করেছে তারা।

গত কয়েকদিনে শয়ে শয়ে পাখির মৃত্যু হয়েছে কেরল, হিমাচল প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে। বার্ড ফ্লু-কে ‘রাজ্যের বিপর্যয়’ ঘোষণা করে কেরলের দুই জেলায় সতর্কতা জারি করেছে পিনারাই বিজয়ন সরকার। হিমাচল প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানেও অসংখ্য পাখির মৃত্যুর খবর মিলেছে। হিমাচলের কাংড়া জেলায় সংক্রমণ এড়াতে মুরগি ও মুরগির ডিম ও মাছ বিক্রির উপর জারি করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। রাজ্যস্থানের প্রাণীসম্পদ বিভাগের মুখ্যসচিব কুঞ্জিলাল মিনা জানিয়েছেন, বার্ড ফ্লু-র কারণেই একাধিক কাকের মৃত্যু হয়েছে। শুধু ঝালওয়ারই নয় পার্শ্ববর্তী কোটা, যোধপুর জেলাতেও এরকম মরা কাক উদ্ধার হয়েছে।

হিমাচল প্রদেশ, রাজস্থান এবং কেরালায় বিপুল সংখ্যক পাখির মৃত্যুর বিষয়টি লক্ষ্য করে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যগুলিকে রোগের বিস্তার রক্ষার জন্য সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নিতে বলেছে।